শুধু ইস্তাহার প্রকাশই নয়, উত্তরপ্রদেশের মানুষের আস্থা অর্জনে এ বার একটি ‘ভিশন ডকুমেন্টও’ প্রকাশ করতে চলেছেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, স্রেফ বদলের কথা বললেই যে মানুষের আস্থা অর্জন সম্ভব নয়, গাঁধী পরিবারের তরুণ নেতাটির কাছে তা স্পষ্ট। কোথায় কতটা পরিবর্তন ঘটানোর পরিকল্পনা কংগ্রেসের রয়েছে, উন্নয়নের সেই মডেলটা সকলের কাছে তুলে ধরা জরুরি বলে মনে করেন তিনি। তাই তিন মাস আগে থেকেই ‘ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি’ নামে একটি দিশা-নথি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল রাহুলের নির্দেশে। এ বার নির্বাচনী ইস্তাহারের সঙ্গেই সেটি প্রকাশ করবেন তিনি।
এ সম্পর্কে আজই আজমগড়ে একটি সভায় রাহুল বলেন, “কংগ্রেস দু’টি আসন পাক বা দু’শোটি, উত্তরপ্রদেশকে না বদলে যাব না।” তবে এ রাজ্যে কংগ্রেসের ভোটভাগ্যে বদল আনতে না পারলে আদৌ সেটা সম্ভব কিনা, সে প্রশ্ন উঠছেই। কারণ, ‘ভিশন ডকুমেন্ট’-এর মতো প্রস্তাব ভোটের প্রচারে খুব কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে, তেমন নজির বিশেষ নেই। গত দুই লোকসভা ভোটের আগেও বিজেপি এই ধরনের দিশা-নথি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আখেরে তাতে যে তেমন কাজ হয়নি, ভোটের ফলেই তার প্রমাণ মিলেছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র রশিদ অলভি অবশ্য এই যুক্তি খারিজ করে বলেছেন, “বিজেপি-র প্রতিশ্রুতির কোনও মূল্য নেই, এটাও প্রমাণিত সত্য। বরং গত দুই লোকসভা ভোটে দলের ইস্তাহারে যে সব কর্মসূচির কথা বলা হয়েছিল, কংগ্রেস তার সবই পালন করেছে।” আলভার আরও দাবি, “উত্তরপ্রদেশে দাঁড়িয়ে রাহুল এ পর্যন্ত যা যা ঘোষণা করেছেন, তার সব ক’টিই রক্ষা করেছে কংগ্রেস ও কেন্দ্র। তা সে বুন্দেলখণ্ডের উন্নয়ন প্যাকেজই হোক বা সংখ্যালঘু সংরক্ষণ।”
এ বার কী থাকছে রাহুলের ওই ২০২০-র দিশা-নথিতে?
কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্যের শিল্প বাতাবরণ থেকে শুরু করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে তাতে। গোড়াতেই জোর দেওয়া হয়েছে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলির শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে। আবার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও প্রকল্প রূপায়ণের কথাও বলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের অনুন্নয়ন প্রসঙ্গে রাহুল বারবারই রাজ্যে কর্মসংস্থানের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। উত্তরপ্রদেশের মানুষ বাইরের রাজ্যে ‘কাজের জন্য ভিক্ষা করতে যান’ বলে বিতর্কও তৈরি করেছেন। শিল্পায়নের প্রসঙ্গে তুলনা টেনেছেন কংগ্রেসশাসিত অন্ধ্র বা মহারাষ্ট্রের। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, যুব সম্প্রদায়কে কংগ্রেসের অনুকূলে টানতে রাজ্যে শিল্প বাতাবরণ তৈরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে চাইছেন রাহুল। দিশা-নথিতে তার প্রতিফলন থাকবে। |