অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা না থাকা-সহ নানা বেনিয়মের অভিযোগে তারাপীঠের তিনটি লজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিল প্রশাসন। পুলিশ, প্রশাসন ও আবগারি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের নিয়ে রামপুরহাটের এসডিও বৈভব শ্রীবাস্তব মঙ্গলবার তারাপীঠের তিনটি লজে অভিযান চালান। পরে তিনি বলেন, “তিনটি লজে অগ্নিনিরোধক ও সরাই লাইসেন্স নেই। নানা ধরণের বেনিয়ম হয়েছে। তাই তিনটি লজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
রামপুরহাটের মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব, রামপুরহাটের এসডিপিও বিশ্বজিৎ ঘোষ রামপুরহাট ১ ও ২ ব্লকের বিডিও শান্তিরাম গরাই ও সোমা সাউ অভিযান চালান। তাঁদের সঙ্গে ছিল ওই দুই ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্মীরা। ছিলেন আবাগারি দফতর ও দমকল বিভাগের কর্মীরাও। মঙ্গলবার তারাপীঠের তিনটি লজে তাঁরা যান। তারাপীঠে ঢোকার পথে একটি লজ ও তারাপীঠ ফাঁড়ির কাছের আরও দু’টি লজে তাঁরা অভিযান চালান। মহকুমাশাসকের অভিযোগ, “লজগুলিতে অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা নেই। নেই রান্না করার জন্য সরাই লাইসেন্সও। এ ছাড়া জমি সংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে। শ্রম দফতরের অনুমতি না নিয়ে লোকেদের কাজে লাগানো হয়েছে। মদ বিক্রি করার ক্ষেত্রেও আবগারি দফতরের নিয়ম মানা হচ্ছে না।” তিনি জানান, বাড়ির রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার লজে রান্না করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। সেরকম তিনটি সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া তিনটি লজের মধ্যে দু’টি লজের মালিক তপন পালের দাবি, “কয়েক জন পর্যটক তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আসা সিলিন্ডার দিয়ে লজের বাইরে রান্না করছিলেন। প্রশাসনের আধিকারিকরা সেই সিলিন্ডারগুলি বাজেয়াপ্ত করে আমাদের দোষারোপ করছেন। একটি লজের দমদলের অনুমোদন রয়েছে। অন্যটির অনুমতি নেওয়া হবে। লজগুলি নির্মাণের সময় পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়েছি।” তারাপীঠ লজ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি জয়ন্ত রায় দাবি করেন, “সিউড়ি, বোলপুর, বক্রেশ্বরের অধিকাংশ লজের এসব লাইসেন্স নেই। অথচ, শুধু তারাপীঠের লজ মালিকদের প্রশাসন হুমকি দিয়ে লজগুলি বন্ধ করে দিচ্ছে।” উল্লেখ্য, তারাপীঠের লজগুলির বিরুদ্ধে নানা বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগও মাঝে মধ্যে ওঠে। মাসখানেক আগে, তারাপীঠ সেতুর উপরে কৃষ্ণনগরের এক যুবককে ভর সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছিল। তার পরে তারাপীঠ মন্দিরের অদূরে দ্বারকা নদের কাছে দুই মহিলার দেহ মিলেছিল। বাসিন্দাদের দাবি, এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসনের উদোগী হওয়া উচিত। |