অভিযুক্ত তৃণমূল
রায়গঞ্জের কলেজে তাণ্ডব, অধ্যক্ষকে চড়, লাথি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির আরও এক কলঙ্কিত দিন দেখল পশ্চিমবঙ্গ।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বের করে এনে বেধড়ক পেটানো হল। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে হামলাকারীদের লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটলো এক শিক্ষকের। অবাধে ভাঙচুর চলল কলেজে। ‘বহিরাগত’ এবং কিছু তৃণমূল নেতার দাপাদাপিতে আতঙ্ক ছড়াল গোটা কলেজ এবং সংলগ্ন এলাকায়। পুরো ঘটনার সময় পুলিশ নীরব দর্শক ছিল বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মূল অভিযোগ রায়গঞ্জের তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে তাঁর কাছে ছাত্র সংসদের আসন্ন নির্বাচন বাতিলের জন্য এ দিন মুচলেকা লেখাতে যায় তৃণমূল। নেতৃত্বে তিলকবাবু। এর পরে যা হল, তা কার্যত নজিরবিহীন। যার নিন্দায় মুখর রাজ্যের শিক্ষামহল এবং বিশিষ্ট জনেরা। প্রতিবাদে এ দিন বিকেলেই রায়গঞ্জ শহরে মিছিল করেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মিছিলের সামনে ব্যানারে লেখা ছিল ‘ছিঃ’! শিলিগুড়িতেও এই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল হয়।
এই ঘটনার পরে সর্বস্তরে যেমন প্রতিবাদ হচ্ছে, তেমনই শিক্ষাবিদরা প্রশ্ন তুলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির কবলমুক্ত করতে আইন করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। কিন্তু নানা অছিলায় যে ভাবে একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিংসা ছড়াচ্ছে, তাতে এই আইনের প্রয়োগ আদৌ হচ্ছে কি?
এ দিনের ঘটনার সঙ্গে রাজ্য-রাজনীতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন কেউ কেউ। বলা হচ্ছে, রাজ্যের শীর্ষ স্তরে যেখানে জোটের দুই শরিকের মধ্যে প্রকাশ্যেই কাজিয়া হচ্ছে, সেখানে রায়গঞ্জের মতো জায়গায় তার প্রভাব পড়তে বাধা কোথায়? কিন্তু তার জেরে যে ভাবে কলেজের অধ্যক্ষকে মারধর করা হল, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেই মনে করছেন সবাই। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র যেমন বলেছেন, “এই ঘটনা অসামাজিক ও বর্বরোচিত। টিভিতে যা দেখা গিয়েছে, পুলিশের উপস্থিতিতে তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে আক্রমণ হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যা ঘটছে, তা সত্যিই উদ্বেগের।” দিনের শেষে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও ঘটনাটিকে ‘নিন্দনীয়’ এবং ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনার বিষয়ে ওই জেলার পুলিশ সুপার, ডিজি এবং জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকদের ছাত্র সংসদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পেয়ে ওই কলেজে যান তিলক চৌধুরী।”
আক্রান্ত অধ্যক্ষ। কলেজের ক্যাম্পাসেই চলছে মারধর। বৃহস্পতিবার তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি।
তবে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া যা-ই হোক, এ দিনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেন কলেজের সাধারণ পড়ুয়ারাই। কারণ তাণ্ডবের ফলে আজ, শুক্রবার থেকেই রায়গঞ্জ ইউনির্ভাসিটি কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
বস্তুত, গত এক বছরে রাজ্যের অনেক স্কুল-কলেজেই ছাত্র-রাজনীতির নামে হিংসার সাক্ষী থেকেছেন সাধারণ মানুষ। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে হাওড়ার জগদ্বন্ধু কলেজে এসএফআই সদস্য স্বপন কোলে খুন হন। একই দিনে ইটের আঘাতে আশুতোষ কলেজের এক এসএফআই সমর্থকের চোখ নষ্টের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি)-র বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ২৯ জুলাই রবীন্দ্রভারতীতে মোটরবাইক রাখা নিয়ে টিএমসিপি-র সঙ্গে বিবাদে এক শিক্ষাকর্মী নিহত হন। এই হিংসার নজির মেলে স্কুলেও। ছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি যাদবপুর বিদ্যাপীঠে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উপরে এক দল তৃণমূল সমর্থক চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন তৃণমূলেরই দুই কাউন্সিলর। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় এক তৃণমূল সমর্থককে।
ছাত্র-রাজনীতি যে কতটা হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে, তা ২০০৬ সালের ২৬ অগস্ট মধ্যপ্রদেশে উজ্জয়িনীর একটি কলেজে প্রত্যক্ষ করেছিল গোটা দেশ। কলেজ চত্বরে এক শিক্ষককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার অংশবিশেষ বিভিন্ন খবরের চ্যানেলগুলিও দেখিয়েছিল। পরে সেই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ঘটনা এ রাজ্যের সাম্প্রতিক সব ঘটনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
১৬ জানুয়ারি ওই কলেজের ছাত্র সংসদের ভোট হওয়ার কথা ছিল। গত বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র তোলার শেষ দিন। ৫৩টি আসনের মধ্যে সব ক’টির জন্য মনোনয়নপত্র তোলে কলেজে ক্ষমতাসীন ছাত্র পরিষদ। কিন্তু, টিএমসিপি ১৬টির বেশি মনোনয়নপত্র তুলতে পারেনি। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেস নেতা ও ছাত্র পরিষদের নির্দেশে অধ্যক্ষ ফর্ম তোলায় জট পাকান। তা নিয়ে কলেজের কর্মী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপন নাগ সরব হন। বুধবার সন্ধ্যায় তপনবাবু এবং ছাত্র পরিষদ নেতা তুষারকান্তি গুহ পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন।
ভোট নিয়ে জট এবং তপনবাবুকে মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি তিলক চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল যায় কলেজে। জড়ো হয়েছিলেন ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরাও। ২০-২৫ জন পুলিশকর্মী তাঁদের এক ধারে সরিয়ে নিয়ে যান। অভিযোগ, অধ্যক্ষ মুচলেকা দিতে রাজি না হওয়ায় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দলীয় পতাকা, লাঠি ও কাঠের বাটাম নিয়ে ঘরের আসবাব, টেলিফোন ও ফ্যাক্স ভাঙচুর করে। দিলীপবাবুকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে এসে বুকে-তলপেটে লাঠি, রড দিয়ে মারা হয়। দিলীপবাবু প্রাণভয়ে কলেজের দোতলায় উঠে পড়েন। সেখান থেকেও তাঁকে ফের টেনে নীচে নামিয়ে পেটে-বুকে লাথি, ঘুষি মারা হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে কলেজ শিক্ষক সুব্রত সাহার মাথা ফাটে। তিনি রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের ঘরেও তাণ্ডব চলে। ওই সময়ে রায়গঞ্জ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর প্রিয়তোষ মুখোপাধ্যায়, রতন মজুমদার ও কেয়া চৌধুরীও ঘটনাস্থলে ছিলেন। কয়েক জন পুলিশকর্মী অধ্যক্ষকে ঘিরে রাখেন। ১১টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চলার পরে নির্বাচন আপাতত স্থগিত জানিয়ে অধ্যক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলেজ বন্ধের কথা ঘোষণা করলে তৃণমূল সমর্থকরা কলেজ ছেড়ে চলে যান।
প্রতিবাদ একনজরে
 

জয়দীপ সরকার, জেলা সম্পাদক
ওয়েবকুটা, কোচবিহার

রায়গঞ্জে যা হয়েছে তার নিন্দার ভাষা নেই। ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি
দেওয়ার দাবিতে শুক্রবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কলেজে কালা দিবস পালন
করবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কর্মবিরতিও হবে।
 

গোপা দত্ত, উপাচার্য,
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
হামলাকারীদের শাস্তি হওয়া উচিত।

রত্না দে, অধ্যক্ষ, বিবেকানন্দ কলেজ আলিপুরদুয়ার

ঘটনাটি দুঃখজনক। কোনও পরিস্থিতিতেই শিক্ষক,
শিক্ষিকাদের গায়ে হাত তোলা উচিত নয়। ফলে
শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের অবনতি হয়।
 

সন্দীপন ভট্টাচার্য, শিক্ষক,
শিলিগুড়ি কমার্স কলেজ

ন্যক্কারজনক ঘটনা। নিন্দার ভাষা নেই।
অধ্যক্ষকে যারা মারধর করছে বলে দেখা যাচ্ছে,
তারা কোন দলের নেতা-কর্মী সে সব বিচার না করে
এখনই গ্রেফতার করতে হবে। না হলে আমরা
লাগাতার প্রতিবাদ আন্দোলন করব।

অশোক ভট্টাচার্য, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী

সত্তর দশকেও এমন হাল হয়েছিল
শিক্ষাক্ষেত্রের। তখন স্কুল-কলেজে কেউ
নিরাপদ ছিলেন না। সাত মাসেই সত্তর দশকের
ছবি জোরদার হয়ে গেল। এর নাম তা হলে
পরিবর্তন! মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির
চক্রান্ত রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর।

 

রুমা ঘোষ, অধ্যক্ষা,
জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কর্মাস

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন পরিবেশ কাম্য নয়।
অধ্যক্ষকে মারধর করার ঘটনা ঘটতে পারে এটা
ভাবতেই পারছি না। কোনও বিষয় বোঝায় সমস্যা
হলে আলোচনা করা যেতে পারত। এমন
ঘটনার নিন্দার ভাষা নেই।

মঞ্জরী বিশ্বাস, অধ্যক্ষ,
কোচবিহার ঠাকুর পঞ্চানন
মহিলা কলেজ

অধ্যক্ষের ওপর শারীরিক নিগ্রহ
মেনে নেওয়া যায় না। কাজ করাই মুশকিল
হয়ে দাঁড়াবে। অধ্যক্ষদের নিরাপত্তা নিয়েও
রাজ্য সরকারকে ভাবতে হবে।
 

বিনয় রবিদাস, অধ্যক্ষ, বালুরঘাট কলেজ

রায়গঞ্জ কলেজে অধ্যক্ষের কলার ধরার ঘটনা শুনে অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছি। কলেজ চত্বরে
এই ধরনের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি শিক্ষার পরিবেশ কলুষিত করবে।
 

রায়গঞ্জে তরুণ দেবনাথের ছবি।

শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের ছবি।
 
পরে দিলীপবাবু বলেন, “আমাকে বলা হয়, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠায় কলেজের নির্বাচন স্থগিত রাখা হল বলে মুচলেকা দিতে হবে। তা দিইনি বলে আমার উপরে হামলা হল। সেই সময়ে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল। আমি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” রাতে দিলীপবাবু পুলিশের কাছে তিলকবাবু ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা প্রিয়ব্রত দুবের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিলকবাবুর অবশ্য দাবি, “আমার ও দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা ছাত্র সংসদের ভোট নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা আমাদের দলীয় পতাকা নিয়ে গোলমাল করেছে।”
পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি রায়গঞ্জের ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) প্রদীপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “পুলিশ ছিল বলেই তো বড় সংঘর্ষ হয়নি। অধ্যক্ষকে তো পুলিশই উদ্ধার করেছে। গোলমালের সময়ে ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বেশির ভাগ পুলিশ তাঁদের আটকাতে ব্যস্ত ছিলেন। তাতে সংঘর্ষ রোখা যায়।”
ঘটনার প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক’টি কলেজে ‘কালাদিবস’ ও কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুটা। ঘটনার পরেই এর প্রতিবাদে জেলা তৃণমূল শিক্ষক সেলের নেতা দেবাশিস বিশ্বাস সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন। আজ, শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে ‘কালাদিবস’ পালন করবে ছাত্র পরিষদ। আজ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে পথ অবরোধও হবে বলে জানান সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাহুল রায়। ঘটনার নিন্দা করেও টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা জানিয়েছেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালতেও যাবেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ঘটনার পরে দলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব দলের পক্ষে সাফাই দিলেও অধ্যক্ষ নিগ্রহের নিন্দা করেননি কেন, তা নিয়েও দলে প্রশ্ন উঠেছে। দলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির বহু সদস্য মনে করেন, শীর্ষ নেতা হিসেবে গৌতমবাবুর অবশ্যই অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনার নিন্দা করা উচিত ছিল। শুধু তাই নয়, তিলকবাবু-সহ দলের কাউন্সিলররা কেন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, তা নিয়েও দলের মধ্যে তদন্তের দাবি উঠেছে।
গৌতমবাবু অবশ্য সন্ধ্যায় বলেছেন, “কেউ-ই আইনের ঊর্ধ্বে নন। অধ্যক্ষের যেমন বেআইনি কাজ করাটা মানায় না, তেমন তাঁকে নিগ্রহ করাও অন্যায়। পুলিশ-সহ সকলের ভূমিকাই খতিয়ে দেখতে হবে।” তিনি এ-ও জানান, দিলীপবাবু প্রথমে সিপিএম ও পরে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সে জন্য তাঁদের দলের প্রতিবাদ-মিছিলে ছাত্র পরিষদের লোক ঢুকে দুর্নাম করার চেষ্টা করছে কি না, সেটাও তদন্ত করতে হবে।
অন্য দিকে, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, “অধ্যক্ষ যদি সিপিএমের হয়ে কাজ করেও থাকেন, তা সত্ত্বেও ওঁর উপরে চড়াও হওয়ার ঘটনাকে কোনও ভাবেই সমর্থন করা যায় না। আসলে ৩৪ বছরের অভ্যাস তো! এত তাড়াতাড়ি সেটা যাবে না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, দিলীপবাবু প্রথমে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন থাকলেও ইদানীং কংগ্রেসের প্রতি নরম দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, “আমি আইন মেনে ভোটের কাজকর্ম করাই বলে অনেকের রাগ হয়। কেউ আদালতে গেলে তো সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। আমিও চাই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.