পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির লটারি প্রক্রিয়ায় অভিভাবকদের উপস্থিতি থাকতে দিতে হবে। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার বহরমপুর কাশীশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল কচিকাঁচারা। ওই ছাত্রীদের বাবা-মায়েরাও পথে নেমে বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। এর জেরে ঘন্টা খানেক কৃষ্ণনাথ রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বহরমপুর গির্জার মোড় থেকে গ্রান্টহলের দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার উপরে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য শিক্ষিকাদের ‘নিরাপত্তার’ স্বার্থে অভিভাবকদের বিক্ষোভকে আমল দেয়নি। শেষ পর্যন্ত জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিক ও স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে লটারি করে পঞ্চম শ্রেণিতে সুযোগ পেয়েছে এমন ২১০ জন ছাত্রীর নামের তালিকা নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। |
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণিতে ২১০টি আসনে ভর্তির জন্য অভিভাবকদের মধ্যে ৯৪৩টি ফর্ম বিলি করা হয়। তার মধ্যে ৭৬০টি ফর্ম জমা পড়ে। এখন এই বিশাল সংখ্যক অভিভাবকদের উপস্থিতিতে লটারি চলাকালিন যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার দায় এড়াতেই প্রধান শিক্ষিকার ঘরে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের প্রতিনিধি সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক কণিকা ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে লটারি হয়েছে। অভিভাবকদের কথায়, “লটারিতে কারচুপি হচ্ছে কিনা স্কুলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। তবে চোখের সামনে লটারি হলে মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ না পেলেও কোনও ক্ষোভ থাকত না।”
প্রধান শিক্ষিকা চৈতালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের স্কুলে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষিকা রয়েছে। তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে লটারি করা সম্ভব হয়নি। তার আগে গোটা বিষয়টি জেলাশাসক ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-কে জানানো হয়। শিক্ষাকাদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁরাও অভিভাবকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি মেনে নেন। তবে এদিন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের উপস্থিতিতে স্বচ্ছতা মেনে লটারি হয়েছে।” চৈতালিদেবী জানান, সরকারি নিয়ম মেনে ওবিসি এ-বি দুটি বিভাগে ১৭%, তফসিলি জাতি ২২% ও তফসিলি উপজাতিভুক্ত ৬% ছাত্রীদের নামের তালিকা তৈরির পরে সাধারণ ছাত্রীদের মধ্যে লটারি হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভেন্দুবিকাশ দত্ত বলেন, “জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা ৯৫১টি। সিদ্ধান্ত হয়েছে, লটারির মাধ্যমে কোনও স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পায়নি, সেই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে তাদের সকলকে স্কুলে ভর্তি করে নেওয়া হবে। এজন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি জেলার সমস্ত স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।” |