রহেজা-অগ্রবাল সাংহাইয়ে
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সততা নিয়ে প্রশ্ন চিনের
য়ু-র হোটেল থেকে নিরাপদে সাংহাইয়ে পৌঁছলেও আপাতত ভারতে ফেরা হচ্ছে না দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীর। চিনের আদালতে মামলা মেটার পরেই দীপক রহেজা ও শ্যামসুন্দর অগ্রবাল দেশে ফিরবেন বলে এ দিন জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু এই ঘটনার পরে চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ও বিদেশ মন্ত্রক ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সততা নিয়ে যে ভাবে প্রশ্ন তুলেছেন, তাতে স্পষ্ট যে সমস্যা রয়েই গেল।
‘পণবন্দি’ দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীর মুক্তির জন্য সচেষ্ট হলেও ভারতীয়দের ব্যবসায়িক আচরণ নিয়ে এ দিন সরব হয়েছে চিন। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হং লেই বলেন, “ভারতের উচিত তাদের ব্যবসায়ীদের আইন মেনে সৎ ভাবে ব্যবসা করতে শেখানো। চিনে আইনের শাসন রয়েছে। এখানকার আইন-কানুন নিয়েও তাদের অবহিত থাকা উচিত।”
চিনা সরবরাহকারীদের সংগঠনের দাবি, মাল নিয়ে গিয়ে দাম না মেটানো এক শ্রেণির ভারতীয় ব্যবসায়ীর অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু চিনা সংস্থা। বিষয়টি নিয়ে চিনা ব্যবসায়ীরা স্বভাবতই উদ্বিগ্ন ও উত্তেজিত। রহেজা ও অগ্রবাল সেই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
চিনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম অবশ্য গোটা ঘটনার নতুন একটি ব্যাখ্যা হাজির করেছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ লক্ষ ডলার মূল্যের সামগ্রী নিয়ে গিয়ে দাম না মেটানোয় দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীকে আটক করেন চিনা রফতানিকারীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করা হয়। কিন্তু আদালতে শুনানি চলার মধ্যেই টয়লেটে নিয়ে যাওয়ার নাম করে দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাংহাইয়ের ভারতীয় কনসুলেটের কর্মী এস বালচন্দ্রন। কিন্তু চিনা ব্যবসায়ীরা আদালতের গেটের কাছে তাঁদের ধরে ফেলেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখে, বালচন্দ্রন মাটিতে বসে দাবি করছেন, চিনা ব্যবসায়ীরা তাঁকে মারধর করেছেন। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তার কোনও চিহ্ন মেলেনি।
ভারতীয় কূটনীতিক ‘প্রহৃত হয়েছেন’, এই খবর পেয়েই নয়াদিল্লি তৎপর হয়। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অবশ্য সেই সময়েই মন্তব্য করেছিলেন, “প্রকাশিত খবরের সঙ্গে ঘটনার মিল নেই।” তার পরে অবশ্য আটক ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মুক্ত করতে তৎপর হয় চিন প্রশাসন।
বেজিং যে ‘তৎপরতায়’ দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে তাতে খুশি নয়াদিল্লি। দলাই লামা বিতর্কে পিছিয়ে যাওয়া দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত আলোচনা চলতি মাসেই হওয়ার কথা। তার আগে যে দীপকদের দেশে ফেরার বিষয়ে নয়াদিল্লি নতুন করে জটিলতা বাড়াতে চাইছে না, তা-ও এ দিন ফের বুঝিয়ে দিয়েছে তারা। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন এ দিন জানান, দীপক ও শ্যামসুন্দরকে নিরাপদেই সাংহাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই পূর্ব-প্রতিশ্রুতি মেনে নয়াদিল্লিও আপাতত দুই ব্যবসায়ীকে দেশে ফেরানোর দাবি তুলছে না। আইনি জটিলতা কাটার পরেই ভারতে ফিরবেন দীপক-শ্যামসুন্দর। আকবরউদ্দিন বলেন, “দু’জনের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাঁরা কোথায় আছেন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। দুই পরিবারকেই শুধু সব খুঁটিনাটি জানানো হয়েছে।”
এ দিকে সাংহাইয়ের হোটেল থেকে দীপক রহেজাও এ দিন ফোনে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যপরীক্ষায় তাঁদের দেহে একাধিক ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। তবে শারীরিক যন্ত্রণার থেকেও মানসিক ভাবে তাঁরা বেশি বিপর্যস্ত। চিনের আদালতে চলা মামলার বিষয়ে তাঁর দাবি, যেখানে তাঁরা কাজ করতেন, সেই ‘ইউরো গ্লোবাল ট্রেডিং’-এর দুই মালিক বাজারে দেদার দেনা করে রেখেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। পরে বন্দি থাকাকালীন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জোর করে তাঁদের কিছু কাগজে সই করিয়ে নেন। যেখানে লেখা ছিল, সংস্থার তরফে প্রাপ্য তাঁদেরই মেটাতে হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.