
|
ভূতভাবন দত্ত চৌধুরী
(প্রধান শিক্ষক) |
|
গ্রন্থাগারের সমস্যা এখনও ভোগাচ্ছে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভারতের প্রাচীনতম ঐতিহ্যমণ্ডিত বিদ্যালয়গুলির অন্যতম হুগলি ব্রাঞ্চ গভর্নমেন্ট স্কুল। লন্ডন মিশনারি সোসাইটির রবার্ট মে ১৮১৪ সালে চুঁচুড়া শহরে একটি প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করেন। এটিকে কেন্দ্র করে পরে তিনি শহরে মোট ৩৬টি অবৈতনিক বিদ্যালয় চালু করেন। ১৮১৮ সালে মে সাহেবের অকালমৃত্যুর পর পরবর্তী যাজকদের উদাসীনতার ফলে স্কুলগুলির মধ্যে মাত্র ১৪টি বিদ্যালয়ই টিঁকে থাকে। মিশনারিদের আবেদনের ভিত্তিতে হুগলির তৎকালীন জেলা জজ ডি সি স্মিথ হুগলি শহরে অবস্থিত বিদ্যালয়টিকে গ্রহণ করেন ও বর্ধমানের রাজা মহতাবচন্দ্র বাহাদুর, উত্তরপাড়ার জমিদার জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রমুখের অনুদানে ১৮৩৪ সালে বিদ্যালয়টি ‘জমিদারি স্কুল’ বা ‘সাবস্ক্রিপশন স্কুল’ নামে চালু হয়। কলকাতার পর এটিই পশ্চিমবঙ্গের প্রথম ইংরাজি বিদ্যালয়। (তথ্য: ‘হুগলি গেজেটস’)।
|
১৮৩৬ সালের ৯ জুলাই বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়। ১ অগস্ট ১৮৩৬-এ হুগলি কলেজ স্থাপিত হলে, ১৮৩৭ সালের ৪ ডিসেম্বর বিদ্যালয়টি উক্ত কলেজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে ‘হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুল’ নামে পরিচিত হয়। ১৯৩২ সালে বিদ্যালয়টি মহসিন কলেজের পরিবর্তে ইন্সপেক্টর অব স্কুলস্-এর অধীনে যায় এবং পরবর্তী কালে ‘মডেল স্কুল’ হিসাবে পরিগণিত হয়।
শুরুর কালে প্রধান শিক্ষক ছিলেন শিক্ষাব্রতী ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জন শিক্ষক আর পাঁচ জন ছাত্র নিয়ে কাজ শুরু হয়। স্কুলটি মোট ৯ বিঘা ৫ কাঠা জমির উপর অবস্থিত এবং ১৭৫ বছরেরও বেশি সময়কালের এই বিদ্যালয়ে একাদিক্রমে তিন পুরুষ বা তারও বেশি ছাত্র আছেন এমন অনেক পরিবার এখানে পাওয়া যায়।
প্রাচীন এই সরকারি স্কুলে সমস্যার পরিমাণও অবশ্য কম নয়। গ্রন্থাগারিকের অভাব এর সুপ্রাচীন গ্রন্থাগারটিকে ব্যবহারের অযোগ্য করে তুলেছে। বিভিন্ন পদ খালি থাকায় বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান যথাযথ করা যাচ্ছে না। বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মহাশয় ভূতভাবন দত্ত চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ইদানীং বেশ কিছু সমস্যার সুরাহা হলেও এখনও নানা অসুবিধা রয়ে গিয়েছে, যা স্কুলটির রোজকার কাজে বাধার সৃষ্টি করছে। তবু সকলের সমবেত প্রচেষ্টায় সমস্যামুক্ত হয়ে আলোর ঠিকানা আমরা দেখতে পাবই। মানুষ হিসাবে আমি বিশ্বাস করি:
‘রাত জিতনি ভি সঙ্গিন হোগি
সুবহ উতনি হি রঙ্গিন হোগি।’ |
আমার চোখে |

প্রণয় কর্মকার
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট বয়) |
|
ভারতের ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলির অন্যতম হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুল। এই বিদ্যালয় জেলার একটি অন্যতম ঐতিহ্যমণ্ডিত ও জনপ্রিয় স্কুল। কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ভূপতি মজুমদার, ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই দক্ষতাসম্পন্ন এবং হৃদয়বান। তাঁরা আমাদের সঠিক দিশা দেখান এবং শিক্ষার ব্যাপারে সর্বৈব সহযোগিতা করেন। আমরা তাঁদের নির্দেশিত পথে অগ্রসর হয়ে আলোর দিশা দেখি। আমাদের বিদ্যালয় খেলাধূলায় খুবই ভাল, বিশেষত ফুটবলে। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি ‘ইংলিশ ক্লাব’ রয়েছে, যাতে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা-সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে চর্চা করা হয়। নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে এই স্কুলে। আমাদর বিশ্বাস, এই স্কুল সর্বার্থেই একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে ছাত্র হিসাবে আবেদন, আমরা যেন একটি আদর্শ গ্রন্থাগারের সুযোগ পাই।
|