‘গণহত্যা’য় অভিযুক্তদের শাস্তি হবে |
বিরোধী নেত্রী হিসাবে এক সময়ে যা ছিল তাঁর ‘দাবি’, প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে তা পূরণের ‘দায়িত্ব’ এখন তাঁরই। দাবি বা দায়িত্ব যে তিনি ভোলেননি, মঙ্গলবার নন্দীগ্রামবাসীকে তা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি-রক্ষা আন্দোলনের সূচনার পঞ্চম বর্ষ-পূর্তিতে এ দিন ভূতামোড়ে সমাবেশের আয়োজন করেছিল ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। দলীয় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর মোবাইল মারফত সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, গণহত্যায় অভিযুক্ত
সবারই শাস্তি হবে। পাশপাশি উন্নয়নের কাজও চলবে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে একবারও তিনি নন্দীগ্রামে আসেননি, তবে শীঘ্রই আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। ২০০৭-এর ৩ জানুয়ারি কালীচরণপুর পঞ্চায়েত অফিসের সামনে জমি-রক্ষার দাবিতে জড়ো হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে ভূতামোড়ে। উত্তাল হয়ে ওঠে নন্দীগ্রাম। সেই ঘটনা স্মরণেই এ দিনের সমাবেশ। সে দিন আহত ৫ জনকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। হাজার কয়েক মানুষের সমাবেশে শুভেন্দু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী, রাজ্যসভার সদস্য দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু এবং সুনন্দ সান্যাল, বিভাস চক্রবর্তী, যোগেন চৌধুরী-সহ বিশিষ্টজনেরা।
|
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি যথেষ্ট না-থাকায় বিচারবিভাগীয় তদন্তে অসুবিধে হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতায় আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় কমিশন হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে বলেন, “দিনহাটায় পুলিশের গুলিবর্ষণ থেকে কল্লোল শূরের অস্বাভাবিক মৃত্যু বিভিন্ন তদন্ত কমিশন হয়েছে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি যথেষ্ট না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। কিছু বিচারপতি অবসর নেবেন। তখন ঠিকমতো তদন্ত করা যাবে।” উপযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি পেলে বাম আমলে নিউ টাউনে জমি বিলির বিচারবিভাগীয় তদন্তও করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই তদন্তের ভার যাঁকে দেওয়া হয়েছিল, নিউ টাউনে তিনি ‘চেয়ারম্যানের
কোটায়’ জমি পেয়েছেন বলে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। ওঁর সিদ্ধান্ত যুক্তিসঙ্গত।” একই সঙ্গে রিজওয়ানুর রহমানের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে নয়া তদন্ত হতে পারে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত এক তরফা হয়েছিল। এটা খতিয়ে দেখতে হবে।”
|
এ রাজ্যের কিছু হজযাত্রীকে মক্কায় ভিখিরি সাজানোর একটি চক্রের হদিশ মিলেছে। মঙ্গলবার এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে দমদমের এক সিপিএম নেতা জড়িত।” হজযাত্রীদের এ ভাবে ব্যবহার করা একটা ‘নোংরা খেলা’ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। মহাকরণে
তিনি বলেন, “এ বার ১৬০ জন হজে তীর্থ করতে গিয়ে ফেরেনি। বাম-সরকার থাকাকালীন বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে এই যাত্রীদের চিহ্নিত করা হয়েছিল। যারা এ সবের ব্যবস্থা করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।” অভিযুক্তদের চাঁই সিপিএমের এক কর্মাধ্যক্ষ বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, অভিযুক্ত আরও চার জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ এ সব খতিয়ে দেখছে।
|
রাজ্যে চাকরি নেই। অথচ বিভিন্ন কর্মসংস্থান কেন্দ্রে বেশ কিছু সরকারি কর্মী রয়েছেন। তাঁদের অন্য বিভাগে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি মহাকরণে বলেন, “এই সব কেন্দ্রে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের অনেকে মাসে
এক দিন বেতন নিতে অফিসে আসেন। বহু জায়গায় কাজ আছে, কর্মী নেই। অনেক জায়গায় আবার কর্মী আছে, কাজ নেই। এই অবস্থা দূর করার চেষ্টা হবে।” সরকারি কাজের মান ও স্বচ্ছতা বাড়াতে বিভিন্ন বিভাগে ‘ই-টেন্ডার’, ‘ই-প্রোকিওরমেন্ট’ প্রভৃতি চালু করা হচ্ছে।
|
পৌষ মাস কাটলে মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “পরিবহণ ও পূর্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দুই দফতরের মন্ত্রী সুব্রত বক্সী সাংসদ হয়েছেন। এই দুই দফতরের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নির্দিষ্ট কোটা মেনে আরও দু’তিনটি দফতরে মন্ত্রী বদল করা যায়। কিন্তু এটা লক্ষ্মী মাস। পৌষ মাসে এ সব বদল করা হয় না। এর পর রদবদল করা হবে।” |