|
|
|
|
অনিয়মের অভিযোগে ভর্তি স্থগিত ঝাড়গ্রামের স্কুলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
স্কুল-কর্তৃপক্ষ লটারি না করে পরীক্ষা নিয়ে মেধা-তালিকার ভিত্তিতে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত স্কুলে সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনে শেষ পর্যন্ত ভর্তি-প্রক্রিয়া স্থগিত করারই নির্দেশ দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। মঙ্গলবার এই নির্দেশ জারির পরেই ঝাড়গ্রামে অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (এডিআই) নির্মলকুমার সাঁতরার দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপ দে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নির্মলবাবু প্রধান শিক্ষককে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, লটারি করেই ছাত্র ভর্তি করতে হবে। কেন লটারি করা হয়নি সে ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে লিখিত ভাবে কারণ দর্শাতেও বলেন এডিআই।
লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে মেধা-তালিকায় নাম ওঠা পড়ুয়াদের এ দিনই ভর্তি শুরুর কথা ছিল। তা হচ্ছে না জেনে অভিভাবকদের একাংশও এডিআইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ না-করার দাবিতে ওই অভিভাবকেরা নির্মলবাবুর দফতরের ভিতরে তুমুল বিক্ষোভও শুরু করেন। অভিভাবকদের দাবি, মেধা-তালিকার ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়া তাঁদের ছেলেদের ভর্তি নিতে হবে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে অভিভাবকদের এডিআই অফিস থেকে সরিয়ে দেয়। নির্মলবাবুর বক্তব্য, “সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্ভব নয়। লটারি করেই ভর্তি নিতে হবে। কুমুদকুমারীর প্রধান শিক্ষককে লিখিত কারণ দর্শাতে বলেছি। জবাব পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” মেধা-তালিকায় নাম ওঠা ১২০ জন ছাত্রের বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট কোনও জবাব দেননি নির্মলবাবু। প্রধান শিক্ষকও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত অক্টোবরেই এই স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ৪০ টাকা দরে পাঁচশোটি আবেদনপত্রও বিক্রি হয়। গত ৮ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা দেয় ৪৮৭ জন। পঞ্চম শ্রেণির আসন সংখ্যা দেড়শোটি। গত ৩১ ডিসেম্বর ১২০ জনের প্রথম মেধা-তালিকা প্রকাশ করা হয়। মঙ্গল ও বুধবার ওই ১২০ জনকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়ার নোটিসও দিয়েছিলেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। তাঁরা সোমবার পর্যন্ত দাবি করেছিলেন, স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে লটারির জন্য কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশিকা তাঁরা পাননি। ফলে এ বারও তাঁরা লিখিত পরীক্ষা নিয়ে মেধা-তালিকা তৈরি করে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিছু অভিভাবক অভিযোগ তোলেন, সরকারি নির্দেশকে কৌশলে লঙ্ঘন করেছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। তার পরেই নড়েচড়ে বসে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর। এই বিতর্কের পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষেছে এসএফআই ও ডিওয়াইএফ। তাদের বক্তব্য, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে রাজ্য সরকারই প্রহসন তৈরি করছে এবং পড়ুয়া ও অভিভাবক মহলে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণিতে সমস্ত পড়ুয়াকে ভর্তির দাবি তুলে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন দু’টি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম শহরে মিছিলও করেছে। |
|
|
|
|
|