মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া-র কর্তা। হিউলেট প্যাকার্ড ল্যাবসের প্রধান। হটমেলের স্রষ্টা। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ‘তারকা সমাবেশ’ দেখল মঙ্গলবারের মহাকরণ!
এ দিন রাজ্য প্রশাসনের সদরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন আজকের ই-মেলের জনক সাবির ‘হটমেল’ ভাটিয়া, মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া-র প্রধান ভাস্কর প্রামাণিক এবং হিউলেট প্যাকার্ড ল্যাবসের ডিরেক্টর প্রীত বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারতে সংস্থার আর এক কর্তা জয়জিৎ ভট্টাচার্য। বৈঠক শেষে পার্থবাবু জানান, রাজ্য সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আমজনতার দরজায় তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছানোর পৃথক পৃথক প্রস্তাব দিয়েছে মাইক্রোসফ্ট ও সাবির ভাটিয়ার সংস্থা। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে পা রাখার ব্যাপারে হিউলেট প্যাকার্ডও ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন পার্থবাবু। কথা রয়েছে, আজ বুধবার মহাকরণে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন টাটা কনসালটেন্সি-র শীর্ষ কর্তা।
তাঁর নতুন উদ্ভাবন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার আগ্রহের কথা সাবির ভাটিয়া জানিয়েছিলেন গত ডিসেম্বরে, ‘ইনফোকম’-এর মঞ্চ থেকে। তাঁর সংস্থা তৈরি করেছে সরকার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এক সরাসরি যোগসূত্র ‘জাক্সটার-এসএমএস।’ যার মাধ্যমে কোনও একটি মোবাইল থেকে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মোবাইলে এসএমএস পৌঁছে যাবে বিনা পয়সায়। আমজনতা এসএমএস মারফত প্রশাসনের কাছে অভিযোগ বা দাবি পৌঁছে দিতে পারবে নিখরচায়। একই ভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে মানুষকে হুঁশিয়ার করতে পারবে প্রশাসন। এ দিন ভাটিয়া বলেন, “এসএমএসের মাধ্যমে প্রশাসন অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারবে। আমরা সরকারি আধিকারিকদের একটা ডিরেক্টরি বানিয়ে দেব। তাই খুব সহজে মানুষ ঠিক জায়গায় নিজের বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন।” পার্থবাবু জানান, প্রস্তাবটি কী ভাবে কার্যকর করা যায়, রাজ্য তা ভেবে দেখছে।
অন্য দিকে মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়া-র কর্তা ভাস্করবাবু জানান, পশ্চিমবঙ্গে তিনটি ক্ষেত্রে তাঁরা সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ই-গভর্ন্যান্সের কাজ করতে আগ্রহী। তাঁর কথায়, “স্কুলে ডিজিট্যাল লিটারেসি বৃদ্ধি, গ্রামাঞ্চলে মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা এবং উচ্চশিক্ষায় উদ্ভাবনী প্রকল্পে আমরা এই রাজ্যকে সাহায্য করতে চাই।”
মহাকরণে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার পর ভাস্করবাবু এবং সাবির ভাটিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেন। দু’জনেরই বক্তব্য, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সুবিধা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে নতুন উদ্ভাবন চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভাবনার সূত্র ধরেই ‘ইনোভেশন সেন্টার’ তৈরির কথা হচ্ছে বলে জানান পার্থবাবু। তাঁর দাবি, রাজ্যে এই ধরনের কেন্দ্রে তরুণদের শিল্পোদ্যোগী হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মূল উপদেষ্টা হিসেবে বিষয়টি দেখাশোনা করবেন সাবির ভাটিয়া স্বয়ং। |