দলাই লামার অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছিল। ভেস্তে গিয়েছিল দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত আলোচনা। সম্প্রতি ইয়ু শহরে স্থানীয়দের হাতে পণবন্দি থাকা দুই ভারতীয় ব্যবসায়ীকে কেন্দ্র করে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জটিলতা আরও বাড়ল।
সংশ্লিষ্ট দুই ভারতীয় ব্যবসায়ী মুক্তি পেলেও সমস্যা সমাধানের কোনও আশু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আদালত মুক্তি দিলেও আপাতত ওই দু’জন, দীপক রাহেজা এবং শ্যামসুন্দর অগ্রবালকে পুলিশ পাহারায় স্থানীয় হোটেলে রাখা হয়েছে। যদিও সেই হোটেল ঘিরে রেখে উত্তেজিত জনতা তাঁদের কার্যত নজরবন্দি করে রেখেছে বলে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে ফোনে জানিয়েছেন দীপক। এরই মধ্যে সাংহাইয়ের ভারতীয় কনস্যুলেটের তরফে ইয়ু শহরে থাকা সমস্ত ভারতীয়দের উদ্দেশে এক সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন অবিলম্বে ইয়ু’র ব্যবসা কেন্দ্রের সঙ্গে সমস্ত ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ রাখেন।
সীমান্ত সমস্যা, অরুণাচল, দলাই লামা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এমনিতেই দিল্লির সঙ্গে বেজিংয়ের চাপানউতোর চলছে। তার উপর দীপকদের মামলায় আদালতে যাওয়ার পর শারীরিক হেনস্থা করা হয় ভারতীয় কূটনীতিক এস বালচন্দ্রনকে। যে ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ কেন্দ্র কালই দিল্লির চিনা দূতাবাসের উপপ্রধান ঝাং ইউয়েকে ডেকে এনে তাদের অসন্তোষের কথা কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিল। এই অবস্থায় দীপকদের কার্যত ‘বন্দি’ থাকার ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার। তবে বেজিং সরকারি ভাবে এ বিষয়ে কোনও রকম দুঃখপ্রকাশ করেছে, এমন কোনও খবর এখনও মেলেনি।
সাংহাইয়ে ভারতীয় কনস্যুলেটের ওয়েবসাইটে প্রচারিত এক সতর্কবার্তায় এ দিন জানানো হয়েছে, ‘পেশাগত কারণে ইয়ু’র ব্যবসা কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সমস্ত ভারতীয় যেন অবিলম্বে তাঁদের কার্যকলাপ বন্ধ রেখে যথাসম্ভব সতর্ক থাকেন। একই সঙ্গে ইয়ুর ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরও জানানো হচ্ছে, তাঁরা যেন আপাতত ইয়ু’র ব্যবসা কেন্দ্র থেকে দূরে থাকেন।’ ওই দুই ব্যবসায়ীকে যত শীঘ্র সম্ভব সাংহাইয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন দূতাবাসের আধিকারিকরা।
কাল নয়াদিল্লির তরফে বালচন্দ্রনের হেনস্থার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশের পর ক্ষমা চেয়েছিলেন ইয়ুর স্থানীয় আধিকারিকরা। ঝাং-ও জানিয়েছিলেন, বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়েই দেখবে বেজিং। এর পরেও দীপকের আশঙ্কা প্রকাশের খবরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ইয়ু’র ভারতীয়দের মধ্যে। সংবাদসংস্থাকে দীপক জানিয়েছেন, তাঁদের পাহারায় হোটেলের ঘরের বাইরে সর্বক্ষণের জন্য দু’জন পুলিশকর্মীকে রাখা হলেও বাইরে বেরনোর অবস্থা নেই। বেশ কয়েকশো উত্তেজিত জনতা এখনও সারা দিনই হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে দীপকদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, দীপকদের সংস্থার কাছে তাঁদের প্রাপ্য অর্থ এখন যে ভাবে হোক মেটাতে হবে দীপকদেরকেই। এই অবস্থায় সাংহাইয়ে না পৌঁছনো পর্যন্ত কোনও মতেই স্বস্তি পাচ্ছেন না তাঁরা। |