করোনেশন সেতুতে ফাটল, দুর্ভোগ
তিস্তার করোনেশন সেতুতে ফাটল ধরায় তার উপর দিয়ে ১০ টনের বেশি ভারি গাড়ি যাতায়াত নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির কাছে তিস্তা সেতু সারানোর কাজ চলায় সেখান দিয়েও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। রেল লাইন সারানোর জন্য ডিএমইউ ট্রেনও বন্ধ। তিনটি পথে যানবাহন চলাচল নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায়, বর্ষশেষের দিন শনিবার তাই দুর্ভোগে কাটাতে হল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেল পুলিশও। রাতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
দুর্ভোগের খবর পেয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের জরুরি ভিত্তিতে যান চালচল স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “করোনেশন সেতুর ফাটল মেরামতের কাজ দ্রুত করার জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। জলপাইগুড়িতে তিস্তা সেতু মেতামতির কাজে গতি আনার জন্যও বলেছি। রেলকেও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। ইংরেজি নতুন বছরে যাতে মানুষকে হয়রান হতে না-হয়, সে দিকে পুলিশ-প্রশাসনকে খেয়াল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
সেবকে করোনেশন সেতু পরিদর্শনে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বাস্তুকাররা। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ১৯৩৭ সালে তৈরি করোনেশন সেতুতে শুক্রবার রাতে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা রেলিং-এর ফাটল দেখেন। তাঁরা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। রাতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহসড়ক কর্তৃপক্ষের বিষয়টি জানানো হয়। রাতে রেলিং পরীক্ষার পরে দেখা যায়, সেটি স্তম্ভ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। পরে সেতুটির তলায় দু’টি ফাটল দেখা যায়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নির্মল মণ্ডল বলেন, “সেতুর নিচের অংশে দু’টি ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই। তবে আমরা ঝুঁকি নিতে চাই না। ১০ টনের উপর ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।” তিনি জানান, কলকাতা থেকে বিশেষ যন্ত্রপাতি আনানো হচ্ছে। ফাটল পরীক্ষার পর সেতুটির কী অবস্থা তা বোঝা যাবে। দার্জিলিঙের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানান, নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ডুয়ার্স থেকে গরুবাথান, লাভা হয়ে কালিম্পং এবং অসম মোড় হয়ে জলপাইগুড়ি ভারি গাড়ি চলাচল করবে।
বস্তুত, বুধবার থেকে বিশেষ রাসায়নিকের সাহায্যে ঢালাই করে তিস্তা সেতু মেরামতের কাজ শুরু করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ওই কাজের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট হচ্ছে। শুক্রবার থেকে সমস্যা উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। রাতে সেতুর যানজটে প্রায় ৬ ঘণ্টা আটকে থাকে হিমালয়ান নেচার অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) একটি বাস। ওই গাড়িতে শতাধিক শিশু-কিশোর প্রকৃতি পাঠ শিবির থেকে ফিরছিল। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত ছোটাছুটি করেন উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “এরকম অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে ভাবতে পারিনি। গাড়ি যখন দেরি করে পৌঁছায় তখনই শিশুদের জন্য আলাদা করে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। অভিভাবকরাও খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। মোবাইলের টাওয়ার না থাকায় ঠিক মতো যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। শেষে ভোর রাতে গাড়ি দু’টি পৌঁছয়।”
শনিবারও তিস্তা সেতুতে যানজট কমেনি। তিন সারিতে রাস্তা দখল করে নানা ধরনের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় উত্তেজিত পথচারীরা কয়েকটি বাস ও ট্রাকের উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে দেয়। গজলডোবা দিয়ে শিলিগুড়ি রুটে ছোট গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে শিলিগুড়িতে পৌঁছতে যাত্রীদের দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু ছোট যানবাহন ওই রাস্তায় চলাচল করতে পারলেও বড় বাস ও ট্রাক যেতে পারেনি। এদিকে, ফালাকাটার কাছে রেল লাইনে কাজ চলায় কোচবিহার-মালদহ রুটের ডিএমইউ ট্রেন বাতিল করা হয়। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে, রবিবারের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.