জলকর নিয়ে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ঘোষিত নীতির উল্টো পথে হাঁটলেন দলেরই বিধায়ক সুলতান সিংহ। বিধাননগরে জলকর বসানোর পক্ষে শনিবার জোরালো সওয়াল করেছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে শনিবার বিধাননগরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। সেখানেই সুলতান বলেন, “বিধাননগরে জলের সমস্যা। বিধাননগরের মানুষকে জলকর দিতে হবে। তার জন্য বাড়ি বাড়ি জলের মিটার বসাতে হবে।”
রাজ্যবাসীর উপরে নতুন করে কোনও কর ‘চাপানোর’ পক্ষপাতী নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও বালির তৃণমূল বিধায়ক তথা সল্টলেকের বাসিন্দা সুলতান প্রকাশ্য মঞ্চে জলকরের পক্ষে সওয়াল করায় তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন কাকলিদেবী। বলেন, “এটি সরকারের নীতির প্রশ্ন। বিধায়ক তা এখানে না বলে বিধানসভায় তুলতে পারতেন।” এমনকী ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আর এক তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসুও
 |
সুলতান সিংহ |
বলেন, “মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করে জলকর নেওয়ার পক্ষপাতী নয় রাজ্য সরকার।”
কাকলিদেবী ছাড়াও তৃণমূল সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, চৌধুরী মোহন জাটুয়ারাও ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নানা সমস্যা নিয়ে মত বিনিময়। কিন্তু সুলতানের মন্তব্য ঘিরে শেষ পর্যন্ত তা কার্যত হয়ে দাঁড়ায় রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মঞ্চ। সুলতান পরে তাঁর কথার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “বিপিএল তালিকাভুক্তদের জলকর থেকে রেহাই দেওয়া ভাল কাজ। তবে বিধাননগরের মানুষ তো পয়সা দিতে পারে। তাই তাঁদের থেকে জলকর নেওয়া যেতেই পারে। এতে পুরসভারও আয় হবে। সরকারের উপর নির্ভরতা কমবে। পানীয় জলের সমস্যাও দূর হবে।”
জলকর বসানোর পাশাপাশি সরকারের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে বিধাননগর থেকে লিজ প্রথা তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন সুলতান। ওই অনুষ্ঠানেই তিনি বলেন, “এ বার বিধাননগর থেকে লিজ প্রথা তুলে দেওয়া হোক। তাতে মানুষ সরাসরি বাড়ি বিক্রি করতে পারবে। সরকারের উপকার হবে। আয়ও বাড়বে।” সম্পত্তি করের প্রসঙ্গ তোলেন সুজিতবাবু। তিনি বলেন, “কেন সম্পত্তি কর নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে অনেকে জানতে চান। তাঁদের বলেছি আইনি জটিলতায় বিষয়টি আটকে আছে। সম্প্রতি পুরসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” এ ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের সাধারণ মানুষের উপরে ‘চাপ না বাড়ানোর’ নীতির কথাই বলেন তিনি। তবে পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, শুক্রবারই মহাকরণে সম্পত্তি করের ব্যাপারে কথা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |