সরলেন নকুল মাহাতো, দায়িত্বে মণীন্দ্র গোপ
প্রায় পাঁচ দশক পর সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকের পদ থেকে ‘অব্যাহতি’ নিলেন নকুল মাহাতো। নতুন জেলা সম্পাদক করা হয়েছে দলে মাওবাদী প্রতিরোধের ‘মুখ’ হিসাবে পরিচিত জেলার জঙ্গলমহলের ‘দাপুটে’ নেতা মণীন্দ্র গোপকে। শুক্রবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর উপস্থিতিতে দলের অষ্টাদশ জেলা সম্মেলনের শেষ দিনে সর্বসম্মতিক্রমে নকুলবাবুকে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, ৮৯ বছরের নকুলবাবু নিজেই দায়িত্ব ছাড়তে চান। নইলে এ বারও তাঁকে ‘সরানো’ সম্ভব ছিল না। এখন প্রশ্ন, নিজে সরে গিয়ে যে উদাহরণ নকুলবাবু রাখলেন, তা কি দলের অন্য ‘বয়স্ক এবং অশক্ত’ জেলা সম্পাদকেরাও অনুসরণ করবেন?

সভায় নকুল
দলই বা তাঁদের ক্ষেত্রে কী করবে? ইতিমধ্যেই দার্জিলিংয়ে সাঙ্গোপাল লেপচা (পাঁচ দফা), মালদহে জীবন মৈত্র (৮ দফা), কোচবিহারে চণ্ডী পাল (৫ দফা) বা নদিয়ায় আশু ঘোষের (৫ দফা) মতো প্রবীণ নেতা জেলা সম্পাদক হিসাবে পুনর্বহাল হয়েছেন। বয়স আর শরীরের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে দলের কাছে অব্যাহতি চেয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক অমিতাভ বসু, মালদহের জীবনবাবু, জলপাইগুড়ির মানিক সান্যালও।
দলের জেলা কমিটি থেকে ২৬ জন সদস্যকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য সহ আরও পাঁচ জনের ক্ষমতা ‘খর্ব’ করে জেলা কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে। ফলে ৮১ জনের কমিটি এখন কলেবরে ছোট হয়ে ৫৫ জনের। ছোট হয়েছে জোনাল ও লোকাল কমিটির বহরও। প্রতিটিতেই সদস্য সংখ্যা কমানো হয়েছে। বর্ধমানেও বৃহস্পতিবার একই ভাবে ৮৮ জনের জেলা কমিটি থেকে ১৮ জনকে ছাঁটাই করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।
১৯৬৪ সালের অগস্ট থেকে দলের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকের পদে ছিলেন নকুলবাবু। এত দিনেও দল তাঁর ‘যোগ্য বিকল্প’ পায়নি। সিপিএম সূত্রের খবর, জেলা সম্মেলনের সমাপ্তি অধিবেশনে মণীন্দ্রবাবুর নাম প্রস্তাব করেন নকুলবাবুই। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন প্রবীণ সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। বিমান বসু, সূযর্কান্ত মিশ্র এবং রবীন দেব সমর্থন করেন। অধিবেশন শেষে শহরের মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের মাঠে ভিড়ে ঠাসা প্রকাশ্য সমাবেশে মণীন্দ্রবাবুর নাম জেলা সম্পাদক হিসাবে ঘোষণা করা হয়। বিমানবাবু বলেন, “দেশে সিপিএমের যত কমিটি রয়েছে, তার কোনওটিতেই কেউ এতদিন সম্পাদক থাকেননি।” নকুলবাবু নিজে বলছেন, “আমার তো অনেকদিন হল। অনেক বয়সও হল। এ বার নতুনরা কাজ করুক।” মণীন্দ্রবাবুর কথায়, “আমার উপর গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। কাজ করতে হবে।”
জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ। ছবি: সুজিত মাহাতো
দলের জেলা কমিটির এক প্রবীণ সদস্য বলেন, “এমনিতে নকুলবাবু আর মণীন্দ্রবাবু দলীয় রাজনীতিতে দুই
মেরুর বাসিন্দা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু জেলায় মাওবাদী হিংসা বাড়তে থাকার পর এবং তা প্রতিরোধে মণীন্দ্রবাবু সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার পর থেকে দু’জনের দূরত্ব অনেকটা কমে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই নকুলবাবু সক্রিয় ভাবে সংগঠন সামলাচ্ছিলেন না। সংবাদমাধ্যমকেও দরকারে মণীন্দ্রবাবুর সঙ্গেই যোগাযোগ করতে বলতেন।”
রাজ্য কমিটির পর্যবেক্ষকেরা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, এই প্রবীণ নেতাকে অন্যতম উপদেষ্টা হিসাবে রেখেই নয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি হবে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়কের পদেও তিনি আসীন থাকছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.