|
|
|
|
মামলা শুরু না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ |
ছাত্রীকে গুলি রায়গঞ্জে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে জখম হল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার পতিরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোকনা এলাকায়। পুলিশ জানায়, জখম ওই কিশোরীর নাম বুলবুলি যুগি। সে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে পড়াশুনা করে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এদিন রাতে বুলবুলি বাবার সঙ্গে বাড়ি সংলগ্ন একটি জমিতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছিল। পেশায় দিনমজুর বুলবুলির বাবা মিন্টুবাবু জমির ধারে দাঁড়িয়ে মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বুলবুলি একদল যুবককে জমিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয়ে চেঁচামেচি জুড়ে দেয়। সেই সময়ে দুষ্কৃতীরা গুলি চালালে কিশোরী গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে ইটাহার হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসকেরা তাকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে রেফার করেন। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এদিন গভীর রাতে ওই কিশোরীকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকার এই ঘটনার খবর পেয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ছুটে যান। তাঁর উদ্যোগেই ওই কিশোরীর প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। এর পর অরিন্দমবাবুর আর্থিক সহযোগিতায় হতদরিদ্র মিন্টুবাবু অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় রওনা হন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কোনও মামলা শুরু না করায় পুলিশের কাজকর্মের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অরিন্দমবাবু বলেন, “মিন্টুবাবু মেয়ের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় চলে যাওয়ায় তিনি থানায় অভিযোগ জানানোর সময় পাননি। দলের তরফে মৌখিক ভাবে জেলা পুলিশ কর্তাদের সমস্ত কিছু জানানো হয়। ঘটনার ১২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা শুরু করল না তা বুঝতে পারছি না। পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাইছে বলে সন্দেহ করছি।” অবিলম্বে পুলিশ মামলা শুরু করে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার না করলে ইটাহার থানা ঘেরাও করে আন্দোলনে নামা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন অরিন্দমবাবু। রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ বলেন, “ওই কিশোরীর বাবা থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি। এ ছাড়া ইটাহার হাসপাতাল থেকেও ওই কিশোরীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর থানায় জানানো হয়নি। সেই কারণে এখনও মামলা শুরু করা হয়নি। তবে ঘটনার পর নির্দিষ্ট সূত্র থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারে মামলা শুরু করে দুস্কৃতীদের গ্রেফতার করা হবে।” এই ঘটনার জেরে জেলা পুলিশের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশ কর্তাদের অনুরোধেই ইটাহার হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ওই কিশোরীর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। তাই ইটাহার হাসপাতালের তরফে নতুন করে থানায় খবর দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই!” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ জানান, পুলিশ সমস্ত কিছু জেনেও মামলা শুরু করল না তা নিয়ে দলের তরফে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব কিছু জেনেও পুলিশ মামলা শুরু না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে তা হয় নাকি? অবিলম্বে মামলা শুরু করে দুস্কৃতীদের গ্রেফতার না করলে দলের তরফে থানা অচল করে আন্দোলনে নামা হবে!” ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্যও পুলিশ কেন মামলা করেনি তা নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। |
|
|
|
|
|