ছয় মাস ধরে পুরুলিয়া জেলায় ভিটামিন ‘এ’ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার প্রায় ৫০ হাজার শিশু। কবে থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, উত্তর নেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের পর প্রতিটি শিশুকে বিসিজি, হেপাটাইটিস বি-১, ওরাল পোলিও টীকা দেওয়া হয়। এরপর থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টীকাকরণ ও ওষুধ চলতে থাকে। ৯ মাস বয়স থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ন’দফায় শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ দেওয়া হয়। তাই মাঝখানে ওষুধ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সন্তানের স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়বে কিনা এ প্রশ্ন বাবা-মায়েদের। মানবাজার গ্রামীন স্বাস্থ্যকর্মী মালতী ঘটকের ছেলের ৫ বছর বয়েস সবে পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, “ভিটামিন ‘এ’ শেষ দফার দেওয়ার কথা ছিল অক্টোবর মাসে। টীকা না দেওয়ায় ছেলের স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হবে না তো?” একই প্রশ্ন কামতাগ্রামের প্রতিমা মাহাতো, মহড়াগ্রামের দোলন গোস্বামীদের। তাঁরা বলছেন, “ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় আছি।”
ঠিক কী ধরণের রোগ দেখা দিতে পারে ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে? প্রাক্তন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ গোপাল চন্দ্র লায়েক বলেন, “ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে রাতকানা রোগ দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শিশুরা যে সব ছোটখাটো অসুখে ভোগে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ালে তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ে। বিশেষ করে যে সব পরিবারে পুষ্টিকর খাবার জোটে না, সেই সব পরিবারের শিশুরা যাতে আলাদা করে ভিটামিন পেতে পারে তার জন্য এই ওষুধ খাওয়ানো খুব জরুরি।” মানবাজার এবং বান্দোয়ানের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ সিংহ হাঁসদা, অবিনাশ বেসরা বলেন, “ভিটামিন ‘এ’ সরবরাহ করার জন্য অনেকবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু পাওয়া যায়নি।”
জেলা মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুর রহমান সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর আমাদের ভিটামিন ‘এ’ সরবরাহ করে। কিন্তু তারা আমাদের না সরবরাহ করায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পাঠানো যাচ্ছে না।” |