|
|
|
|
রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তোলা হচ্ছে বালি-পাথর, নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের উদাসীনতায় শিলিগুড়িতে মহানন্দা ও বালাসন নদী থেকে বালিপাথর তোলা বাবদ প্রতিদিন রাজ্য সরকারের লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নদী থেকে বালি-পাথর তোলা জন্য ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতর যাঁদের পারমিট দিয়েছে, সেই মহানন্দা রিভার গভর্নমেন্ট কোয়ারি পারমিট হোল্ডার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাই এই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নদী থেকে বালিপাথর যে সমস্ত ট্রাক মালিকেরা শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন তাঁদের অধিকাংশ গাজোয়ারি করে রাজস্ব না-দিয়ে ব্যবসা করছেন। বাধা দিতে গেলে তাঁদের উপরে হামলা হচ্ছে। এই ঘটনায় তাঁরা যেমন আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনই সরকারি রাজস্ব আয় কম হচ্ছে। সাত দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না-হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। ওই সমিতির সম্পাদক মহম্মদ নূর আলি বলেন, “ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরকে বহু বার ঘটনাগুলি জানিয়ে নজরদারি বাড়ানোর আর্জি জানানো হলেও দফতরের কর্তারা নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমন চললে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।” উদাসীনতার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক গোপাল লামা। তিনি বলেন, “নজরদারির জন্য শিলিগুড়িতে অতিরিক্ত ৩টি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্লক এবং মহকুমা স্তরের আধিকারিকদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। ওই সমিতির সদস্যরা সরাসরি আমায় জানালে কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি লাগোয়া মহানন্দা নদীর দু’পাশে অন্তত ৩০টি নদী ঘাট থেকে তাঁরা বালিপাথর তোলার অনুমতি দিয়েছেন। নদী থেকে যে সমস্ত বালিপাথর নিয়ে যাওয়ার সময়ে মালিকদের ট্রাক পিছু ২০০ টাকা করে রাজস্ব দিতে হয়। কোয়ারি পারমিট হোল্ডারদের আগাম টাকা জমা দিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে চালান আনতে হয়। ওই চালান না-নিয়েই কিছু ট্রাক মালিক জোর করে বালিপাথর তুলছেন বলে অভিযোগ। রাতের বেলা গোটা মহানন্দা নদীটাই ওই সমস্ত ট্রাক মালিকদের দখলে চলে যাচ্ছে। যে পরিমাণ চালান ভূমি ও ভূসিংস্কার দফতর থেকে দেওয়া হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি বালিপাথর তোলা হচ্ছে বলে কোয়ারি পারমিট হোল্ডারদের অভিযোগ। এদিন মহানন্দা রিভার গভর্নমেন্ট কোয়ারি পারমিট হোল্ডার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের অফিসাররা প্রায়ই নদী ঘাটে অভিযান চালালেই এই ধরনের ‘অপরাধ’ বন্ধ করা সম্ভব। পাশাপাশি, শহরের যে সমস্ত বাসিন্দারা ট্রাক মালিকদের কাছ থেকে বালিপাথর কিনছেন তাঁরাও চালান দেখে কিনছেন কি না ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরকে তা খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দিয়েছেন ওই সমিতির সদস্যরা। সমিতির সদস্য মিন্টু দাস বলেন, “বাসিন্দারা যদি চালান ছাড়া বালিপাথর নিতে অস্বীকার করেন তাহলেও এমন রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করা সম্ভব। ভূমি সংস্কার দফতরকে এই ব্যাপারেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দফতরের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি।” জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বলেন, “শহরের বাসিন্দাদের কাছ থেকেও চালান দেখতে অভিযান হচ্ছে। বাসিন্দাদের মধ্যে এই ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। রাজস্ব ক্ষতি মেনে নেওয়া হবে না।” |
|
|
|
|
|