প্রশ্ন উঠেছে পরিকাঠামো নিয়ে
বাড়ির নকশা অনুমোদন করবে পঞ্চায়েত সমিতি
পযুক্ত পরিকাঠামো না-থাকলেও আয় বাড়াতে এলাকার পাকা বাড়ির নকশা (বিল্ডিং প্ল্যান) অনুমোদনের কাজ নিজেরা করবে মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতি। বুধবার সমিতির তরফে সাধারণ সভা ডেকে বৈঠক ডেকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানেন মাটিগাড়া ব্লকের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন করে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। সেই বাবদ ফি যা নেওয়া হয় তার অর্ধেক অবশ্য পঞ্চায়েতকে দেয় এসজেডিএ। তবে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত আইনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে, এমন এলাকায় সমস্ত বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর ক্ষমতা পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের মৌসুমী বাগ বলেন, “নতুন বছর থেকেই মাটিগাড়া ব্লকের সমস্ত বিল্ডিং প্ল্যান পঞ্চায়েত সমিতি পাশ করবে। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে নিয়ে দ্রুত এই ব্যাপারে ব্লক জুড়ে প্রচার করা হবে।” কিন্তু, পঞ্চায়েত সমিতিতে যে কজন ইঞ্জিনিয়র রয়েছেন, তাঁরা নানাবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের তদারকি করতেই হিমশিম খান। তার উপরে বিল্ডিং প্ল্যানের দায়িত্ব বর্তালে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী, এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “পঞ্চায়েত সমিতির পরিকাঠামো কোথায়? একজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র একটা দশতলা বাড়ির প্ল্যান পাশ করবেন! আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কথা বলে বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর ক্ষমতা এসজেডিএ-র হাতে নেওয়া হয়। আদায় করা ফি’য়ের অর্ধেক পঞ্চায়েতকে দেওয়া হত। যা বলা হচ্ছে সেটা শুরু হলে মাটিগাড়ায় বেআইনি বিল্ডিং বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” তবে সমিতির পরিকাঠামোর প্রশ্নে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত আইনে পরিকাঠামো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে সেটা খোঁজ নিয়েই বলতে পারব।” শিলিগুড়ি শহরের পরে মহকুমায় এখন দ্রুত হারে জনবসতি বাড়ছে মাটিগাড়া এলাকায়। শিবমন্দির, মাটিগাড়া, খাপরাইল, চম্পাসারি, মেডিক্যাল মোড় এলাকায় একের পর এক বহুতল তৈরি হচ্ছে। বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করার জন্য শিলিগুড়ি পুরসভার একটি পৃথক বিভাগ রয়েছে। এসজেডিএ-রও তেমনই ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির হাতে ৪ জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র ছাড়া পরিকাঠামো বলতে তেমন কিছুই নেই। এ ব্যাপারে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতি যদি নিজেরাই বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করতে চায়, তাহলে এই ব্যাপারে নগরোন্নয়ন দফতরের মতামত চাইব। দফতরের নির্দেশ মতোই আমরা চলব।” পঞ্চায়েত সমিতির বক্তব্য, তাঁরা কেবল দুই তলা ভবনের বিল্ডিং প্ল্যানই পাশ করবেন। তার চেয়ে উঁচু বাড়ির বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর জন্য মহকুমা পরিষদে পাঠাবেন। সমস্ত ব্লিডিং প্ল্যান জমা নেওয়া হবে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। মাটিগাড়ার বিডিও বীর বিক্রম রাই বলেন, “বিষয়টি জেলাশাসক, মহকুমাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকে জানানো হয়েছে।” শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “বহুতলের নকশা অনুমোদনের নির্দেশ দেওয়া হলে অবশ্যই তা করে দেওয়া হবে। তবে আমাদেরও কর্মীর অভাব রয়েছে। তেমন পরিস্থিতি হলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখবেন।” ২০০৮ সালে এই আইনটি তৈরি হলেও রাজ্যের বাম সরকারের আমলে বিষয়টি নিয়ে অন্তত শিলিগুড়িতে উচ্চবাচ্য হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যে নয়া সরকার তৈরি হলে পঞ্চায়েত দফতর থেকে সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতিকে নিজেদের আয় বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে সিপিএমের হাত থেকে মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের হাতে চলে যাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা। সমিতির দাবি, বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু হলে বছরে ৭০-৮০ লক্ষ টাকা আয় হবে। মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি নীলিমা গুহনিয়োগী বলেন, “আমি সভাপতি থাকাকালীন এসজেডিএ বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করত। পঞ্চায়েত সমিতিকে এই ব্যাপারে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কি না জানি না। খোঁজ নিয়ে বলব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.