নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলেজ সার্ভিস কমিশন বা সিএসসি-র মাধ্যমে রাজ্যে শেষ বার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে ২০০৮ সালে। পরের তিন বছরে শিক্ষক নিয়োগ তো দূরের কথা, নিয়োগ সংক্রান্ত কাজই হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়া কবে যে ফের শুরু করা যাবে, সেই ব্যাপারে খোদ কমিশনই এখনও রীতিমতো সংশয়ে।
এর জেরে সাধারণ ভাবে সব প্রার্থীই অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। বিশেষ ভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেই সব প্রার্থীর ভবিষ্যৎ, যাঁরা নেট বা সেট-এ সফল হয়েছেন, কিন্তু কলেজে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার সর্বোচ্চ বয়ঃসীমা (৩৭ বছর) পেরিয়ে গিয়েছেন। পরপর তিন বছরে এক বারও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু না-হওয়ায় তাঁদের অনেকেই এক বারও ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পাননি। শুধু তা-ই নয়, আগামী দিনে আদৌ ইন্টারভিউয়ে ডাক পাবেন কি না, তা নিয়েও আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। কমিশন-কর্তৃপক্ষ অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়ঃসীমা শিথিল করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হল কেন? টানা তিন বছর ধরে যে নিয়োগই হচ্ছে না, তার কারণ হিসেবে কমিশন-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কলেজগুলিতে কত শিক্ষক-পদ খালি হয়েছে, উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে সেই তথ্যই সিএসসি-র কাছে পৌঁছয়নি। আর ওই তথ্য না-পেলে ফের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না।
কবে মিলবে ওই তথ্য? সিএসসি জানে না। উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছেও এই প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর নেই।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী এখন রাজ্যের কলেজগুলিতে দেড় হাজারের কিছু বেশি শিক্ষক-পদ খালি আছে। তবে চূড়ান্ত তালিকায় এই সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর। উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণ সময়ের এক জন শিক্ষকের পদ খালি থাকলে কলেজ-কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে আংশিক সময়ের তিন জন শিক্ষক নিয়োগ করতে পারেন। যে-সব কলেজে এই নিয়মে আংশিক সময়ের শিক্ষক নেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে আর পূর্ণ সময়ের শিক্ষক দেওয়া হবে না। কারণ, কলেজে কর্মরত আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা চাইলে ৬০ বছর পর্যন্ত ওই কাজ করতে পারেন বলে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার।
এই পরিস্থিতিতে কলেজে শূন্য পদের তালিকা তৈরি করতে আরও সময় লাগবে বলে উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা মনে করছেন। দফতর সূত্রের খবর, সাধারণ পদগুলির তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন সংরক্ষিত শূন্য পদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আগামী মাসেই কমিশনে তালিকা পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আর কমিশনের চেয়ারম্যান বলছেন, “বিকাশ ভবন শূন্য পদের তালিকা দিলেই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে।” |