নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলেজ সার্ভিস কমিশন টানা তিন বছর কোনও শিক্ষক নিয়োগ করতে না-পারলেও স্কুল সার্ভিস কমিশন এ বার বিপুল সংখ্যক পদে শিক্ষক নিতে চলেছে। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা হবে ২০১২ সালের মে মাসে। প্রায় ৫৫ হাজার পদে শিক্ষক নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল।
এসএসসি-র পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ৩ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টেট ব্যাঙ্কের ৩৭০টি শাখায় আবেদনপত্র দেওয়া হবে। ১২ জানুয়ারির মধ্যে তা পূরণ করে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া আজ, শুক্রবার থেকেই এসএসসি-র ওয়েবসাইট www.westbengalssc.com-এ আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে বলে জানান চিত্তরঞ্জনবাবু। তিনি বলেন, “ফর্মের দাম ৩৩০ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকা করা হয়েছে। তফসিলি জাতি, উপজাতি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ফর্মের দাম ১৩০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৮০ টাকা।”
কমিশন-কর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, “আমাদের তথ্য অনুযায়ী এখন শূন্য শিক্ষক-পদের সংখ্যা ৭,২১০। তা বেড়ে ১৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া সরকার প্রায় সাড়ে ৩৯ হাজার নতুন পদ তৈরি করেছে। ওই সব যোগ করে প্রায় ৫৫ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা হবে মে মাসে।” নতুন পদগুলির বেশির ভাগই বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান।
পরীক্ষার বিষয়-বিন্যাসে এ বার কিছু নতুনত্ব থাকছে। নতুনত্ব মূলত দ্বিতীয় পত্রে। এসএসসি-তে বরাবরই দুই
পত্রে পরীক্ষা হয়। দ্বিতীয় পত্রে এত দিন সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষা হত। এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ মেনে
ওই পত্রে প্রশ্ন হবে ‘টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট)-এর আদলে। চিত্তরঞ্জনবাবু জানান, দু’ভাগে পরীক্ষা হবে
তিন ঘণ্টার। ৬০ নম্বরের প্রথম পত্রের পরীক্ষা হবে প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। দ্বিতীয় পত্রে শিশু মনস্তত্ত্ব এবং প্রার্থীর পছন্দের দু’টি ভাষার পরীক্ষা হবে। এই পত্রের মোট
নম্বর ৯০। এবং এই পত্রে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলে তবেই প্রার্থীর প্রথম পত্রের খাতা দেখা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফের কমিশনের পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রেও নিয়মের কিছু অদলবদল হচ্ছে। কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন বলেন, “এত দিন কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা অন্তত তিন বছর শিক্ষকতা করার পরে তবেই ফের এসএসসি-র পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেতেন। এখন থেকে তাঁরা দু’বছর শিক্ষকতার পরেই ফের পরীক্ষা দিতে পারবেন।”
অভিজ্ঞ শিক্ষকদের জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়ার নিয়মও চালু হচ্ছে। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অভিজ্ঞতার জন্য কোনও শিক্ষক বছরে ০.৫ নম্বর হিসেবে সর্বাধিক পাঁচ পেতে পারেন। বি এডে ৫৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলে তিনের বদলে এখন থেকে ছ’নম্বর পাওয়া যাবে। মাইক্রোবায়োলজি, জৈবপ্রযুক্তি, নৃতত্ত্বের স্নাতকেরাও এ বার লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারবেন। সেই সঙ্গে নাটক, সূচিশিল্পের মতো বিষয়েও পরীক্ষা দেওয়া যাবে। |