চূড়ান্ত পর্বে পৌছল কামদা কিঙ্কর মুখোপাধ্যায় স্মৃতি গোল্ড কাপের গ্রাম ফুটবল প্রতিযোগিতা। ২৬ টি দল নিয়ে চূড়ান্ত পর্বের খেলা শুরু হবে জানুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজক সংস্থার কোঅর্ডিনেটর শুভাশিস দাস বলেন, “১৩টি জোনে ব্লক পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ইতিমধ্যেই ৭টি জোনের ফাইনাল পর্বের খেলা শেষ হয়েছে। প্রতিটি জোন থেকে ২টি করে ১৪টি দল উঠে এসেছে চূড়ান্ত পর্বে। ৬টি জোনে এখনও শেষ হয়নি খেলা। খেলা চলবে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। ৩০ ডিসেম্বর চূড়ান্ত পর্বের খেলার সারণি তৈরি করতে উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি সভা ডাকা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৩টি জোনের ২৫৬টি দল নিয়ে প্রতিযোগিতার কথা বলা হলেও কার্যত অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে কয়েকটি ব্লকে খেলা সময়ে শেষ করা যায়নি। আশা করা হচ্ছে চূড়ান্ত পর্বের খেলার শেষে ফাইনাল হবে ফেব্রুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে। ইতিমধ্যে রঘুনাথগঞ্জ ম্যাকেঞ্জি মাঠ সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে গেলে ফাইনাল হবে ওই মাঠেই।” এই নিয়ে জঙ্গিপুরে চতুর্থবার আয়োজিত হচ্ছে কে কে এম গোল্ড কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা। গত তিন বছর এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে গোল্ড কাপ জিতেছে ফরাক্কা জোনের ক্লাবগুলি। এতদিন এই প্রতিযোগিতা ছিল ২৪০টি দলের এবং মুর্শিদাবাদ জেলার ৩টি সংসদ এলাকা নিয়ে। এবারে বীরভূমের দুটি সংসদীয় ক্ষেত্রকে সংযুক্ত করে দলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫৬। এলাকা ও দলের সংখ্যা বাড়ায় এই ফুটবলকে ঘিরে একটা বাড়তি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে।
লালগোলা ব্লকের ফুটবল কমিটির সভাপতি আনন্দ ঘোষ বলেন, “ঠিক ছিল ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ২টি করে ক্লাব অংশ নেবে। কিন্তু এলাকার বেশিরভাগ ক্লাবের আগ্রহের ফলে শেষ পর্যন্ত ৩৬টি দলকে নিয়ে খেলা করতে হয়েছে। ফলে এখনও ২টি খেলা বাকি রয়েছে। আশা করছি জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহেই ব্লকের খেলা শেষ করা যাবে।”
একইভাবে ১১টি পঞ্চায়েতে ২২টি দল অংশ নেওয়ার কথা ছিল সাগরদিঘিতে। সাগরদিঘির উদ্যোক্তা কমিটির সভাপতি রাজেশ ভকত বলেন, “নিরুপায় হয়ে বাড়তি দল নিয়ে তাদের মধ্যে প্রাথমিক পর্বে বাছাই করতে হয়েছে। ফুটবলের প্রতি আগ্রহ গ্রামবাংলায় এমনিতেই রয়েছে। তারপর কে কে এম কে ঘিরে বাড়তি উৎসাহ এসেছে সর্বত্রই।” সামশেরগঞ্জের উদ্যোক্তা কমিটির সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু ব্লক পর্যায়ে খেলা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছিল তাই ১৬টি দলের বেশি নেওয়া যায়নি। যারা এর আগে সুযোগ পায়নি এবারে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাদের।” ফরাক্কা জোনে অবশ্য খেলা শুরু হয়েছে সবে মাত্র শনিবার। ফলে সেখানে ২ জানুয়ারি ব্লক পর্যায়ে ফাইনাল হবে। সেখানে খেলছে ১৫টি দল। খেলা চলছে খড়গ্রাম, নবগ্রাম এবং বীরভূম জোনেও।
আয়োজক সংস্থার কর্ণধার শ্রেণিক শেঠ বলেন, “এত দল নিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন এ রাজ্যে নজিরবিহীন। আরো বহু দল চাইছে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। কিন্তু পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে সকলকে নেওয়া যাচ্ছেনা। তবে ইতিমধ্যেই কিছু তরুণ ফুটবলারকে নিয়ে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে জঙ্গিপুরে। উদ্দেশ্য এদেরকে কোলকাতার কোন বড় দলের অর্ন্তভুক্ত করা।” জঙ্গিপুরের বিশিষ্ট ফুটবল প্রশিক্ষক সুবোধ দাস বলেন, “ফুটবলে নিঃসন্দেহে আগ্রহ বাড়িয়েছে কে কে এম ফুটবল প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই আগ্রহকে স্থায়ীভাবে ধরে রেখে মানোন্নয়নের পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার। যা এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি।” |