গৃহশিক্ষকের বাড়ি থেকে বেরোনোর ঠিক পরে সহপাঠীদের সামনেই দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর গলার নলি কেটে খুন করল এক যুবক। ওই ছাত্রীর নাম দামিনী দত্ত ওরফে পলি (১৭)। মুর্শিদাবাদের লালগোলার জনবহুল জেল ময়দান পাড়ায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ এই ঘটনার পরে এলাকার লোকজনই তাপস সরকার নামে ওই যুবককে ধরে ফেলে। তারপর তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করাতেই দামিনীকে খুন করেছে তাপস। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে লালগোলার কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। লালগোলা থানার ওসি দেবাশিস সরকার বলেন, “বছর তেইশের ওই যুবক তাপস সরকারের বাড়ি জিয়াগঞ্জ থানার পদমপুরে। কেন ওই খুনের ঘটনা ঘটল তার তদন্ত শুরু হয়েছে।” তাপস শাঁখারির কাজ করে।
স্থানীয় শৈলজা মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী দামিনীর বাড়ি লালগোলা বাজারের উত্তর সুদর্শনগঞ্জ এলাকায়। সেখান থেকে সংস্কৃতের গৃহশিক্ষিকা কবিতা দাসের বাড়ি প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে জেল ময়দান পাড়ায়। কবিতাদেবী বলেন, “পাঁচটা নাগাদ দামিনী ও তার সহপাঠীরা বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়ে যায়। কয়েক মিনিট পরে চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি, আমার বাড়ি থেকে সামান্য একটু দূরে মাটিতে পড়ে ছটফট করছে দামিনী। আর ভোজালি হাতে মারমুখী ওই ছেলেটি কাউকে কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছে না। তাকে ঘিরে তখন ১৫-২০ জন মানুষ।” কবিতাদেবী জানান, একটি সাইকেল ছুড়ে মারা হয় তাপসকে। সে তখন টাল সামলাকে না পেরে পড়ে গেলেই শুরু হয় গণপ্রহার। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ওই যুবক তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
দামিনীর বাবা শঙ্কর দত্ত একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। শঙ্করবাবু ও তাঁর স্ত্রী অনিতাদেবীর একটিই সন্তান। শঙ্করবাবু বলেন, “তাপস আমার মেয়ের বন্ধু শ্রাবণী হালদারের মাসতুতো দাদা।” মাস পাঁচেক ধরে তাপসের সঙ্গে দামিনীর সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। শঙ্করবাবু বলেন, “আমার মেয়ে তাপসকে বিয়ে করতে অসম্মত হয়।” কবিতাদেবী জানান, অনেক দিন পর এ দিন দামিনী পড়তে এসেছিল। সঙ্গে এসেছিলেন তার মা। কবিতাদেবীর বাড়ির উল্টো দিকের বাড়ির বারান্দায় বসেছিলেন তিনি। |