|
|
|
|
উদ্যোগ জেলায় |
মার্চের মধ্যে লোধাদের বাড়ি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অবশেষে টনক নড়ল জেলা প্রশাসনের। মার্চ মাসের মধ্যেই যাতে লোধাদের বাড়ি তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা খরচ করা যায় তার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিটি ব্লক, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরকে যথাযথ পদক্ষেপ করার কথাও জানানো হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ আধিকারিক প্রণব ঘোষ জানিয়েছেন, আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই লোধাদের বাড়ি তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তার জন্য দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।
২০০৮-’০৯ আর্থিক বছরে লোধাদের বাড়ি তৈরির জন্য ৬ কোটি টাকা পেয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তার মধ্যে মাত্র ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা খরচ করতে পেরেছে প্রশাসন। অর্থাৎ তিন বছরেও বরাদ্দ টাকার অর্ধেক খরচ করতে পারেনি! লোধাদের পক্ষ থেকে বার বার দাবি জানানো হয়েছে, বিক্ষোভ আন্দোলনও হয়েছে। তাতেও কাজ হয়নি। অভিযোগ, টাকা পড়ে থাকলেও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবেই বাড়ি তৈরি হচ্ছে না। অথচ, গরিব লোধারা ভাঙাচোরা বা ছোট্ট ঝুপড়িতেই থাকছেন। যে বাড়িতে বৃষ্টির সময় জল পড়ে, শীতের রাতে হু-হু করে ঢুকে পড়ে ঠান্ডা হাওয়া। গরিব লোধারা এ ভাবেই কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন। অথচ, সরকারি কোষাগারে তাঁদের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পড়ে রয়েছে। মেদিনীপুর লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বলাই নায়েক ও লোধা-শবর উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক সীতেশ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘গরিব লোধারা চিরদিনই বঞ্চিত। গ্রামে নেই পানীয় জল, রাস্তা, সেচের ব্যবস্থা। দু’বেলা পেট ভরে অনেকেরই খাবার জোটে না। সব জেনেও সরকার ও প্রশাসন নীরব। না হলে লোধাদের বাড়ি তৈরির টাকা বছরের পর বছর পড়ে থাকে কী করে!”
২০০৮-’০৯ সালে আদিম জনজাতির বসবাস প্রকল্পে ৬ কোটি টাকা পেয়েছিল জেলা প্রশাসন। ওই সময়ে ১ লক্ষ টাকায় এক-একটি বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত তিন বছরে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে অনেকটাই। ফলে ১ লক্ষ টাকায় বসবাসের উপযুক্ত বাড়ি তৈরি এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, এই তিন বছর প্রকল্পের টাকা ব্যাঙ্কে জমা থাকায় যা সুদ পাওয়া গিয়েছে তা দিয়েই এক-একটি বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ করা সম্ভব। প্রশাসন জানিয়েছে, যাঁরা সব চেয়ে গরিব, বসবাসের উপযোগী বাড়ি নেই, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তার জন্য প্রতিটি ব্লক থেকেই তালিকা সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে প্রশাসন। নতুন বছরের গোড়াতেই যাতে কাজ শুরু করে দেওয়া যায়, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এত বছর ধরে টাকা পড়ে থাকল কেন? কেন এত দিন গরিব লোধাদের বাড়ি থেকে বঞ্চিত করা হল? সে প্রশ্নের কিন্তু সদুত্তর মেলেনি প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে।
|
|
|
|
|
|