সদ্যসমাপ্ত ‘পঞ্চায়েত যুব ক্রীড়া অউর খেল অভিযানে’ (পাইকা) রাজ্যস্তরে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখল পটাশপুরের পঁচেট এলাকার বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী। এর মধ্যে দু’জন জাতীয়স্তরে যোগদানের জন্যও নির্বাচিত হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে এই প্রতিযোগিতা হয়।
খালি পায়ে দৌড়েই ‘অনুর্ধ্ব ১৬ বিভাগে’ ব্যক্তিগত ৮০০ মিটার দৌড়ে তৃতীয় এবং রিলে রেসে একই স্থান দখল করেছে পঁচেটগড় হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী লাবনী জানা। বাড়ি পঁচেট গ্রামেই। বাবা দিল্লিতে গাড়ি চালান। বিপিএল পরিবারে তিন ভাই-বোন। ছোটবেলা থেকে খেলাধুলো করতে ভালবাসলেও এর জন্য আলাদা করে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা ভাবতেও পারে না লাবনী। সে বলে, “আমার খেলার জুতোই নেই। যুবভারতীতে সকলে যখন জুতো পড়ে দৌড়চ্ছে তখন আমি খালি পায়ে। চোখে জল এসে গিয়েছিল। জুতো থাকলে সিন্থেটিক ঘাসে আমি হয়তো আরও ভাল করতেও পারতাম।” আর তার বাবা বলেন, “জুতো তো দূরের কথা, পুষ্টিকর খাবারটুকুও দিতে পারি না। সরকারি ভাবে সাহায্য পেলে হয়তো মেয়ে আরও সাফল্য পাবে।” পঁচেটগড় হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ বেরা ও ক্রীড়-শিক্ষক গোপালচন্দ্র শাসমল বলেন, “ব্লকে ও জেলাস্তরে দু’টি বিভাগেই প্রথম হওয়ার পরে আমরা ওর প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।” |
একই কাহিনি পঁচেটের বাসিন্দা সঞ্জয় মাইতি ও খড়াইয়ের পূর্ণচন্দ্র কামিল্যার। এরা দু’জনেই ২৪ ডিসেম্বর নদিয়ার চাকদহ নেতাজি সুভাষ স্টেডিয়ামে আয়োজিত ভলিবল প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছে। সেই সুবাদে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় রাজ্যের হয়ে খেলার সুযোগও পেয়েছে। সঞ্জয় পঁচেটগড় হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা মদনবাবু দিনমজুর, মা পরিচারিকা। অন্য দিকে, পূর্ণচন্দ্রের বাবা গোপালবাবু গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। স্কুলেরই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অপর্ণা হোতা ১৫০০ মিটার দৌড়ে জেলায় দ্বিতীয় ও দশম শ্রেণির ছাত্র শোভন দাস ১০০ মিটার দৌড়ে জেলায় তৃতীয় হয়েছে। তা ছাড়া, জেলায় সেরা ভলিবল দলের ১২ সদস্যের মধ্যে ন’জনই এই স্কুলের। উচ্ছ্বসিত স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি কানাইলাল পয়ড়্যা ও পঁচেটের পঞ্চায়েত প্রধান নজিবুর মল্লিক বলেন, “কৃতীদের শুধু সংবর্ধনা দিয়েই আমরা থেমে যাব না। এদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা
করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাব।” |