করলা নদীতে বিষ-কাণ্ডের পরেও নদীখাতে অবাধে চাষ চলছে। শীতের সময় শুকিয়ে যাওয়া নদী খাতের মাঝখানে বেড়া দিয়ে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া সারদাপল্লি এলাকায় শীতের শাকসবজি চাষ চলছে। নদী খাতের প্রায় বিঘা পাঁচেক এলাকায় আলু, মুলো, ফুলকপি, সর্ষে, বাঁধাকপি, কুমড়োর মত শীতের শাকসবজি চাষ হয়েছে। মাস খানেক আগে করলা নদীতেই বিষক্রিয়ায় প্রচুর মাছের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তার পরেই নদী ঘিরে প্রশাসন-পুরসভার তৎপর হয়। পরীক্ষায় জানা যায়, নিষিদ্ধ কীটনাশক এন্ডোসালফান অতিমাত্রায় জলে মিশে যাওয়াতেই বিষক্রিয়ায় মাছের মড়কের ঘটনা ঘটে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “এত কাণ্ডের পরেও করলা নদীতে নজরদারির কি পরিস্থিতি বোঝাই যাচ্ছে। আগামী শনিবার করলা নদী নিয়ে বৈঠক রয়েছে। সেখানেই যা বলার বলব।” সারদাপল্লির যে এলাকায় নদী খাতে চাষ হয়েছে, সেখানেও এন্ডোসালফান কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষকদেরই একাংশ। বিষকাণ্ডের পরে নদী বক্ষে অবৈধ ভাবে বোরো ধান চাষ করার অভিযোগে শহরের ইন্দিরা কলোনি এলাকার এক কৃষককে গ্রেফতারও করা হয়। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার মধ্যেই ফের নদী খাতে চাষ করার ঘটনা সামনে এসেছে। মাছের মড়কের পরবর্তী জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীতে নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগে সারদাপল্লি এলাকায় চাষের ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আনা হয়। নদী লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারাই এই চাষ করেছেন বলে অভিযোগ। এলাকারই বাসিন্দা এক কৃষক নব মল্লিক বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই আমরা সকলে চাষ করছি. এবারও করেছি। কেউ আপত্তি করেনি। আর চাষ করতে গেলে কীটনাশক ব্যবহার করতেই হয়। সবুজ শাকসবজি চাষে এন্ডোসালফান ব্যবহার করলে ভালো ফল মেলে।” এই ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরগুলির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেচ দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদীখাত থেকে শাকসবজি তুলে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেচ দফতরের মহকুমা বাস্তুকার কেশব রায় বলেন, “নদী খাত থেকে সব শাকসবজি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।” |