চুরি গিয়েছে জানলা-পাম্প, কাটোয়ায় সঙ্কটে দুই দফতর
শু চিকিৎসালয় না ভূতুড়ে বাড়ি! দেখে বোঝা দায়।
কাটোয়া শহরের আদর্শপল্লি সংলগ্ন অনাদিবাবুর বাগানে পশু চিকিৎসালয় ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের ভবন দু’টির জীর্ণ দশা। চুরি গিয়েছে জানলা, দরজা, সাব-মার্সিবল পাম্প-সহ বহু সামগ্রী। রাতের অন্ধকারে সাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর থেকে শাল-সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। গত এক বছরে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিকেরা অন্তত ১৫টি অভিযোগ কাটোয়া থানায় জমা দিয়েছেন। কাটোয়া ১ ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিক (বিএলডিও) শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি ব্যান্ডেল-কাটোয়া ডবল লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। লাইনের ধারে যে সব বাসিন্দারা থাকতেন, তাঁরা এখন দফতরের জমিতেই বসবাস শুরু করেছেন। সরকারি সম্পত্তি দখল করা হচ্ছে, এই মর্মে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।”
১৯৮৪ সাল থেকে কাটোয়া শহরের আদর্শপল্লির কাছে অনাদিবাবুর বাগানে রয়েছে ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। পশু চিকিৎসালয়টিও ভূতনাথতলা থেকে ২০০৪ সালে অনাদিবাবুর বাগানে স্থানান্তরিত করা হয়। দু’টি দফতরের জন্য চিকিৎসক ও কর্মীদের আবাসন, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ৮.৭৯ একর জমিতে দুই দফতরের দু’টি ভবন ছাড়াও ছিল শাল, সেগুন-সহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ। রয়েছে তিনটি পুকুরও।
বছর তিনেক সব কিছু ঠিকঠাক চললেও পরিস্থিতির অবনতি ঘটে ২০০৮ সাল থেকে। ২০১০-এ পশু চিকিৎসালয় চত্বরে গাছ কেটে রেখেছিল বন দফতর। গেট ভেঙে ওই গাছ চুরি করে নেয় দুষ্কৃতীরা।
ঝোপ-জঙ্গলে ভরা কাটোয়া ১ প্রাণিসম্পদ দফতর। নিজস্ব চিত্র।
পশু চিকিৎসালয়ের সিনিয়র ভেটেনারি অফিসার গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “গত দু’বছরে এই চত্বর থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ চুরি গিয়েছে।”
ওই পশু চিকিৎসালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দফতরের চারদিক ঝোপ-ঝাড়ে ভর্তি। দরজা-জানলা খুলে নিয়ে যাওয়ার চিহ্নও স্পষ্ট। ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের গেটও উধাও। ওই দফতরের এক কর্মীর অভিযোগ, “পশু চিকিৎসালয়ের ভিতরে অ্যালুমিনিয়ামের তার গলানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম হয়। নৈশপ্রহরী বাধা দিতে যাওয়ায় এক বার তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাড়া করেছিল দুষ্কৃতীরা।”
কাটোয়া ১ ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আরও এক কর্মী বলেন, “ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দফতরে থাকতে হয়। তবে ৪টে বাজলেই ভয় করে। বিকেল থেকেই এই চত্বরে মদ্যপানের আসর বসে। নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি আমরা।”
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পুরো এলাকা উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু টাকার অভাবে তা সম্ভব হয়নি। কাটোয়া ১ ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিক শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “প্রশাসন নজর দিলে সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব।” মহকুমাশাসক (কাটোয়া) দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশকে আগেই বলা হয়েছে। বাকি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখব।” বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। পুরোপুরি বন্ধ করা জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.