বেআইনি বালি তোলার বিরুদ্ধে কাঁসাইয়ের নদীবক্ষে ফের তল্লাশি চালাল প্রশাসন। একাধিক লরিও আটক করা হল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক সুরজিৎ রায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা তল্লাশি শুরু করেন। মোহনপুর, আমতলাঘাট, রেলসেতু-সহ সর্বত্রই তল্লাশি চালানো হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেআইনি বালি-বোঝাই বেশ কয়েকটি গাড়ি ধরা পড়েছে। ওই সমস্ত গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৬টি লরি ও ২ টি ট্রাক্টর আটক করে পুলিশ। আরও ২টি লরি ধরা হয়েছে যাতে সরকারি অনুমোদনের অতিরিক্ত বালি তোলা হয়েছিল।
গত ২২ ডিসেম্বরও বড়সড় তল্লাশি হয় অবৈধ বালি খাদানের বিরুদ্ধে। সে দিন অতিরিক্ত জেলাশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে ছিলেন ভূমি ও ভূমি সংস্কারের দফতরের আধিকারিকেরাও। এক দিনেই ৪৩টি লরি ধরা পড়েছিল সে বার। বালি তোলার ৬টি যন্ত্রও আটক করেছিল পুলিশ। তার পরেও অবশ্য অবৈধ বালি তোলা বন্ধ হয়নি। সাত দিনের মাথায় ফের তল্লাশি চালাল প্রশাসন। অবৈধ ভাবে এবং অবাধে বালি তোলার ফলে নদীগর্ভে তৈরি হচ্ছে বিপজ্জনক গর্ত। নদীতে স্নান করতে নেমে গর্তে তলিয়েও গিয়েছেন অনেকেই। অ্যানিকেত বাঁধেরও ক্ষতি হচ্ছে। যে কোনও সময়ে নদীগর্ভে চলে যেতে পারে খড়্গপুর পুরসভার পাম্পঘরও। কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ীর মুনাফার লোভে বিপন্ন প্রকৃতি ও মানুষ। |
অবৈধ বালি তোলা বন্ধে আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে বারে বারেই। ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের এক শ্রেণির কর্মী-আধিকারিক এবং রাজনীতি জগতের কিছু লোকের প্রচ্ছন্ন মদতেই অবৈধ কারবার চলতে পারেছ বলে অভিযোগ। কিন্তু সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জেলা প্রশাসনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করতেই হবে। কারণ, মেদিনীপুর, খড়্গপুর শহরের মানুষ পানীয় জলের জন্য কাঁসাইয়ের উপরেই নির্ভরশীল। মেদিনীপুর সদর, খড়্গপুর গ্রামীণ, পিংলা, ডেবরা ও কেশপুরের একাংশ মিলিয়ে ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মে সেচও দেওয়া হয় কাঁসাইয়ের জলে। বালি তোলা বন্ধ করতে না পারলে জলস্তর নেমে যাবে, ভেঙে পড়বে অ্যানিকেত বাঁধও। তাই বালি তোলা বন্ধে কয়েক দিন আগেই কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ-প্রশাসন। ২২ ডিসেম্বর তল্লাশি চলে। তাতেও বালি তোলা বন্ধ হয়নি। তাই ফের বৃহস্পতিবার অভিযান চালানো হল। শীতবস্ত্র দান। মেদিনীপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেসের উদ্যোগে ওয়ার্ডের গরিব মানুষকে শীতবস্ত্র দান করা হল বৃহস্পতিবার। ৬০ জন গরিব মানুষকে কম্বল দেওয়া হয় বলে ওয়ার্ড কংগ্রেস নেতা চন্দর রায় জানিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর শম্ভু চট্টোপাধ্যায়, সৌমেন খান, কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়। |