|
|
|
|
আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বাগনানে ব্যাঙ্ক ডাকাতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাগনান |
ডেপুটি ম্যানেজারের পিছু পিছু ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হাওড়ার বাগনানে ইউবিআইয়ের শাখা থেকে ৩৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার সকালে মিনিট ৪০ ধরে ওই লুঠপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা বেরনোর সময়ে ‘ডাকাত, ডাকাত’ চিৎকারও করে। রাত পর্যন্ত কাউকে ধরা যায়নি।
ব্যাঙ্কটি বাগনান বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি তিনতলা বাণিজ্যিক ভবনের দোতলায়। চার দিকে দোকান, ডাক্তারখানা। জনবহুল এলাকার মধ্যে দুষ্কৃতীরা কী ভাবে এল, কী ভাবেই বা চলে গেল সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ১০টা থেকে গ্রাহক পরিষেবা শুরু হলেও ব্যাঙ্কের আধিকারিক ও কর্মীরা ৯টা থেকেই আসতে শুরু করেন। এ দিন ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজার অরুণকুমার ঘোষ কোলাপসিবল গেট এবং দরজার তালা খুলে ভিতরে ঢোকেন। সঙ্গে সঙ্গে চার দুষ্কৃতী তাঁর সঙ্গে ঢুকে ব্যাঙ্কের দরজা বন্ধ করে দেয়। তার পরে ভেঙে দেয় অ্যালার্ম বেল। কেটে দেয় টেলিফোনের তার। ব্যাঙ্কের কোনও নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী নেই। দুই দুষ্কৃতী অরুণবাবুর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে দেওয়ালের দিকে মুখ করিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে। দুই দুষ্কৃতী চলে যায় দরজার কাছে। এর পরে ম্যানেজার শ্যামাপদ কুলধি এবং অন্য কর্মীরা আসতে থাকেন। কয়েক জন গ্রাহকও সকাল ১০টা নাগাদ চলে আসেন। সকলেরই অরুণবাবুর দশা হয়। ১০টা ৫ মিনিট নাগাদ ক্যাশিয়ার আসেন। দুষ্কৃতীরা তাঁকে এবং অরুণবাবুকে নিয়ে ভল্টের কাছে চলে যায়। ক্যাশিয়ারকে দিয়ে ভল্টের তালা খোলায় তারা। তার পরে সঙ্গে আনা বড় ব্যাগে ওই টাকা ভরে নেয়। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যাওয়ার আগে দুই কর্মীর মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেয় তারা।
দুষ্কৃতীরা চিৎকার করে চলে যাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাঙ্ককর্মীরাও চিৎকার করেন। সাধারণ মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে চলে আসেন। কিন্তু কাউকে ধরা যায়নি। ঘটনাস্থলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা এবং এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) তন্ময় সরকার। ডাকাতির খবর পেয়ে শ্রীরামপুর থেকে ওই ব্যাঙ্কের হুগলি রিজিয়নের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলরাম মণ্ডলও চলে আসেন। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা কয়েক দিন ধরে খোঁজখবর নিয়ে রীতিমতো পরিকল্পনা করে এসেছিল। তারা ঝাড়খণ্ডের পেশাদার ব্যাঙ্ক-ডাকাত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, যে দু’টি মোবাইল ফোন দুষ্কৃতীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়, তার সূত্র ধরে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।অরুণবাবু বলেন, “দুষ্কৃতীদের বয়স ২৮-৩০ বছরের মধ্যে। তারা হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিল। পরনে সাধারণ জামা-প্যান্ট ছিল।” এই ঘটনার জেরে এ দিন ওই শাখায় গ্রাহক পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। |
|
|
|
|
|