পাহাড়, সমুদ্র, অরণ্য কী নেই বাংলায়! সবই আছে। কিন্তু অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রেরই পরিকাঠামোর এমন বেহাল অবস্থা যে, পর্যটকদের অভিযোগের শেষ নেই। ফলে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, কেরল, হিমাচলের মতো রাজ্যগুলিতে যখন বছরভর দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে, পশ্চিমবঙ্গ সেখানে অনেক পিছিয়ে। রাজ্য সরকার তাই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়নে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী ভাবে লগ্নি টানা যায়, তার জন্য পরামর্শ নেওয়া হবে বণিকসভাগুলির।
রাজ্যে সুন্দরবন, দিঘা, দার্জিলিং, ডুয়ার্স আছে। রয়েছে মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো ঐতিহাসিক জায়গাও। আছে গঙ্গাকে ঘিরে নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার সুযোগ। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই সড়ক ব্যবস্থা তো খারাপই। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎও মেলে না। অথচ রাজ্যের পর্যটক ছাড়াও বিদেশিদের কাছে ওই সব জায়গার আকর্ষণ কম নয়। তাই রাজ্য প্রথমেই ওই সব জায়গায় যাওয়ার রাস্তা সারানোর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ, সড়কের পাশে শৌচাগার, পানীয় জল, এমনকী ইন্টারনেটের মতো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে চাইছে। তৈরি করা হবে হোটেলও। কিছু কিছু জায়গায় হেলিকপ্টার পরিষেবাও চালু করতে চাইছে সরকার। এই সব ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নি টেনে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প রূপায়ণের পথ খুঁজতে বলা হয়েছে শিল্প দফতরকে।
এই পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে বণিকসভা সিআইআই এবং ফিকি-কে সঙ্গে রাখতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মহাকরণে ওই দুই বণিকসভার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী রচপাল সিংহ, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। ঠিক হয়েছে, বণিকসভাগুলির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই পর্যটন কেন্দ্রগুলির সৌন্দর্যায়ন, পরিকাঠামো উন্নয়নে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিন্তু রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা এখন বেশ খারাপ। পর্যটন কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে বাড়তি অর্থ আসবে কোথা থেকে? ঠিক হয়েছে, রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল প্রভৃতি ক্ষেত্রে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি তাদের বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ করবে। পর্যটনের প্রসারে বেসরকারি লগ্নির টানার চেষ্টা হবে। মমতা এ ব্যাপারে অন্যান্য দফতরের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন।” |