|
|
|
|
সিপিএমের যৌথ পথে নয়, সিপিআই একক আন্দোলনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সঙ্গে সিপিএম একযোগে আন্দোলনের কথা বললেও উল্টো পথে হাঁটল বাম শরিক সিপিআই। জঙ্গলমহল থেকে ডুয়ার্স, বিস্তীর্ণ এলাকার আদিবাসীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দাবিতে একাই আন্দোলন করতে চায় তারা। শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য সম্মেলনে সোমবার এই মর্মে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদারের বক্তব্য, “বাম আমলে নানা কারণে আদিবাসীদের দাবি পূরণ করা যায়নি। তার মধ্যে দুর্নীতি, পঞ্চায়েতের ব্যর্থতা, রাজনৈতিক দুর্বলতাও রয়েছে। তবে বর্তমান সরকারও আদিবাসীদের উন্নয়ন সে ভাবে করতে পারছে না। তাই আদিবাসীদের উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।”
সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত দার্জিলিং জেলা সম্মেলনে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছেন, সামাজিক উন্নয়নের প্রশ্নে প্রয়োজনে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সঙ্গেও তাঁরা আন্দোলনে যাবেন। সে ক্ষেত্রে বামফ্রন্টের বড় শরিকের রাস্তায় তাঁরা হাঁটবেন কি না, সেই প্রশ্নে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক বলেন, “আমরা আমাদের মতো আন্দোলন করব। কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন করব। কৃষি পরিবারের জন্য পেনশন-সহ নানা দাবিতে রাস্তায় নামব। রাজ্যের ৫০ লক্ষেরও বেশি আদিবাসীদের নিয়ে ভাবছি। সে জন্যই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে।” তা ছাড়া, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের মধ্যেই নানা গোলমাল রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। দলীয় সূত্রের খবর, জঙ্গলমহল থেকে ডুয়ার্স সর্বত্র আদিবাসীদের মধ্যে অনুন্নয়ন নিয়ে যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে, তা নিয়ে সিপিআইয়ের সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। দার্জিলিং জেলার একাধিক প্রতিনিধি দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানান, কিছু দিন আগে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সঙ্গে একযোগে আন্দোলনের কথাও বলেছে সিপিএম। কিন্তু সিপিআইয়ের সম্মেলনে অধিকাংশ প্রতিনিধি এ ব্যাপারে সিপিএমের পথে হাঁটা যাবে না বলে মতপ্রকাশ করেন। তার পরেই আদিবাসীদের নিয়ে ‘একক ভাবে আন্দোলনে’র প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনায় বড় শরিকের ‘দাদাগিরি’র প্রসঙ্গ তুলে অনেক প্রতিনিধিই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অধিকাংশেরই মত, বামফ্রন্ট যাতে কোনও একটি শরিক দলের কুক্ষিগত হয়ে না-পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বামফ্রন্টের নিজস্ব দফতর এবং যুগ্ম আহ্বায়ক পদের দাবি (যা সিপিআই রাজ্য নেতৃত্ব দলিলে রেখেছেন) যাতে পূরণ হয়, সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার উপরে জোর দেন। কোনও দলের তরফে ‘দাদাসুলভ’ আচরণ করা হচ্ছে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করা জরুরি বলেও অনেক প্রতিনিধি মত প্রকাশ করেন। দার্জিলিং জেলার এক নেতার কথায়, “দাদা (সিপিএম) যা করবে, তা-ই ভাইকে করতে হবে নাকি! সিপিএম আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সঙ্গে আন্দোলনের কথা ভাবতেই পারে। আমরা আমাদের মতো চলব! সেই মর্মেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।” |
|
|
|
|
|