|
|
|
|
কেশপুরে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব |
ব্লক সভাপতির কড়া হুঁশিয়ারি বিক্ষুব্ধদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কেশপুরের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের এ বার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন দলের ব্লক সভাপতি আশিস প্রামাণিক। তাঁর বক্তব্য, “দলবিরোধী কাজ করার জন্য নেপাল ঘোষ, মির আরশেদ আলিদের মতো নেতা-কর্মীদের দলীয় অফিসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমনকী পঞ্চায়েতের কাজকর্ম দেখারও প্রয়োজন নেই। দলের নির্দেশ সত্ত্বেও কেউ দল-বিরোধী কাজ চালিয়ে গেলে তাঁদের দলীয় নেতা-কর্মীরাই বাধা দেবেন।”
রবিবার ব্লক কমিটির বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আশিসবাবু জানান। তাঁর কথায়, “বেশ কিছুদিন ধরেই কেশপুরে কয়েক জন দল-বিরোধী কাজ করে চলেছেন। ফলে অশান্তি ছড়াচ্ছে। ওই সমস্ত নেতা-কর্মীদের দাবি কী, তাঁরা কী চান তা জানানোর জন্য আলোচনায় বসারও আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু কেউই আলোচনায় আসেননি। তাই ব্লক কমিটি কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।” তবে এখনও আলোচনার রাস্তা খোলা থাকছে জানিয়ে আশিসবাবু বলেন, “ওঁরা আলোচনায় বসুন। দলের মিটিংয়ে অংশ নিন। কোনও বিষয়ে কিছু বলার থাকলে মিটিংয়েই জানান। সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করলে সংগঠন মজবুত হবে। কিন্তু ওঁরা সে পথে আসছেন না। আমি এখনও চাই, ওঁরা নিজেদের ভুল বুঝে দলের স্বার্থে আলোচনায় বসুন। তাতে সকলেরই ভাল হবে।”
রাজ্যে পরিবর্তনের পর থেকেই কেশপুরে অশান্তি চলছে। চিত্ত গরাই ব্লক সভাপতি থাকার সময়েও যেমন অশান্তি হয়েছে তেমনই তাঁকে সরিয়ে আশিস প্রামাণিককে সভাপতি করার পরেও অশান্তি হচ্ছে। অভিযোগ, চিত্তবাবুর একটি গোষ্ঠী রয়েছে, আবার আশিসবাবুরও একটি গোষ্ঠী রয়েছে। এর বাইরেও আর একটি তৃতীয় গোষ্ঠী হয়েছে। বর্তমানে সেই গোষ্ঠীকে নিয়েই বেশি অশান্তি ছড়াচ্ছে। যে গোষ্ঠীতে রয়েছেন নেপাল ঘোষ, মির আরশেদ আলিরা। যাঁরা প্রকাশ্যেই চিত্তবাবু ও আশিসবাবু--দু’জনকেই ‘তোলাবাজ’ বলেও অভিযোগ এনেছেন। মিছিলও করেছেন। বিভিন্ন স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচনে দলের ব্লক সভাপতির অনুগামীদের বিরুদ্ধে প্রার্থীও দিচ্ছেন। তা নিয়েই দোগাছিয়ায় সম্প্রতি জোর সংঘর্ষ বেধেছে। যার জেরে কেশপুরে ১৪৪ ধারা পর্যন্ত জারি করতে হয়েছে মহকুমা প্রশাসনকে।
কেশপুর অনেক দিন ধরেই ছিল সিপিএমের শক্তঘাঁটি। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের পর সিপিএমের প্রায় সব নেতাই এলাকা ছাড়া। অনেক নেতা বিভিন্ন মামলায় জড়িয়েও ‘ফেরার’ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল মজবুত সংগঠন গড়ে তুলতে পারত। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল সংগঠন মজবুত করা তো দূরের কথা, প্রতি দিন নিজেদের মধ্যেই সঙ্ঘাতে জড়াচ্ছে। জনমানসে দলের ভাবমূর্তিও মলিন হচ্ছে। এলাকার উন্নয়ন-কাজেও শাসকদলের গোষ্ঠী-বিবাদের প্রভাব পড়ছে। দলীয় কোন্দলের ক্ষেত্রে এ বার কঠোর পদক্ষেপের পথেই হাঁটতে চাইছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব।
|
|
|
|
|
|