উত্তরপ্রদেশে ফের একই কৌশল জেডিইউয়ের
বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের হুমকি শরদের
মনিতেই ঘরোয়া সঙ্কট কিছু কম নয় বিজেপি-তে। উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে এ বার অন্যতম শরিক দলকে নিয়ে সমস্যা বাড়ল তাদের। আসন রফা নিয়ে দর কষাকষির বৈঠকে বাগ্বিতণ্ডা। আর তার জেরেই উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের ঘোষণা করে বসলেন সংযুক্ত জনতা দল (জেডি-ইউ)-এর নেতা শরদ যাদব।
বিতণ্ডা বেধেছিল বিজেপি-র অনন্তকুমারের সঙ্গে। শরদের দাবি ছিল অন্তত তিন ডজন আসন। অনন্তকুমাররা রাজি হননি। তাঁদের বক্তব্য, গত বিধানসভা ভোটে জেডি-ইউ এবং তাদের সহযোগী ‘আপনা দল’ মিলিয়ে ৬০টির মতো আসন ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু জেডি-ইউ পাঁচটির বেশি আসন পায়নি। আপনা দল একটিও নয়। জেডি-ইউকে বেশি আসন দেওয়ার কোনও যুক্তিই নেই। বিজেপি-র এই মনোভাবে অসন্তুষ্ট হয়েই শরদ আজ উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়ে দেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত অপমান সহ্য করে নেব। কিন্তু দলের অপমান কোনও ভাবেই বরদাস্ত করব না। বিজেপি-র হয়েও আমাদের দল আর প্রচার করবে না।”
এই ‘সম্পর্ক ছেদের’ পিছনে বিজেপি নেতা বেঙ্কাইয়া নায়ডুরও কিছু ভূমিকা রয়েছে। এক দিকে শরদরা যখন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন, তারই মধ্যে বেঙ্কাইয়া কাল ঘোষণা করে দেন, এক মাত্র পঞ্জাবে অকালিদের সঙ্গে ছাড়া আর কোনও রাজ্যেই জোট করবে না বিজেপি। মনে করা হচ্ছে, ঘিয়ে আগুন পড়েছিল এতেই।
বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য আশা, সঙ্কট মিটে যাবে। জোটেও এর কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ আসনরফার বৈঠকে ২০-২২টি আসন ছাড়ার প্রস্তাবে রাজিও হয়েছিল এনডিএ-র এই পুরনো শরিক। তবে খোদ এনডিএ আহ্বায়কের কাছ থেকেই থেকে এই ধরনের প্রকাশ্য মন্তব্যের পর নড়েচড়ে বসেছেন বিজেপি নেতারা। শরদের সঙ্গে কথা বলেই বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছেন।
তবে আসন ছাড়ার প্রশ্নে কিন্তু বিজেপি শিবিরের সাফ কথা, উত্তরপ্রদেশে জেডি-ইউয়ের কোনও ভিত্তিই নেই। বিহারে তাদের সঙ্গে জোট রয়েছে বলে অন্য রাজ্যেও তাদের ‘অহেতুক’ সুবিধা পাইয়ে দিতে হবে, তার কোনও যুক্তি নেই। বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতার কথায়, “গুজরাত, রাজস্থানের মতো অনেক রাজ্যেই ওদের সঙ্গে জোট নেই। বিহারে জোট রয়েছে বলে জেডি-ইউ যদি কাল হিমাচলে আসনের ভাগ চেয়ে বসে, সে দাবি মানার অর্থ কী? তা ছাড়া, কর্নাটকে তারা বিজেপি-বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করছে। শরিক দল হয়ে সেটাও কি কাম্য?”
বেশি আসন চাওয়ার পক্ষে জেডি-ইউ নেতাদের যুক্তি এই রকম: গত নির্বাচনে ‘আপনা দল’-এর সঙ্গেও সমঝোতা হয়েছিল। তাই তাদেরও আসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই দলের প্রধান সোনেলাল পটেল প্রয়াত হয়েছেন। সেই দলের সমর্থকরা এখন জেডি-ইউয়ে সামিল হয়েছেন। জেডি-ইউয়ের তাই আরও বেশি আসন প্রাপ্য। বিজেপি উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফায় যে আসনের তালিকা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে, তার থেকেও আসন চেয়েছিল শরদের দল। অকালি দল বাদে আর কারও সঙ্গে আসনরফার সম্ভাবনা নাকচ করে বেঙ্কাইয়া এনডিএ-র বাকি শরিকদের চাপে রাখার চেষ্টা চালিয়েছিলেন কাল। শরদ আজ পাল্টা চাপে ফেললেন প্রধান বিরোধী দলকে। উত্তরপ্রদেশে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও শরদ ঠিক একই ধরনের মন্তব্য করে বিজেপি-র থেকে বাড়তি আসন আদায় করে নিয়েছিলেন। বিজেপি নেতৃত্ব এ বারও আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা শুরু করেছেন। ফলে ‘সম্পর্ক ছেদের’ ঘোষণা এ বার দু’দলের সম্পর্কে নতুন কী সমীকরণ তৈরি করে, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.