একই চত্বরে অবস্থিত নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলের চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ৮৭ জন ছাত্রীকে সরাসরি বর্ধমান পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে হবে। অভিভাবকদের এই দাবি মানতে চাননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে জেলা স্কুলসমূহের পরিদর্শক (মাধ্যমিক), তথা ডিআই অফিসের সামনে অনশনে বসেন অভিভাবকেরা। বিক্ষোভ সামলাতে শেষে পুলিশ ডাকতে হয় ডিআই আব্দুল হাই-কে। একই সঙ্গে লটারি-বন্ধের নির্দেশ দিয়ে পুর বালিকা বিদ্যালয়েও বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। সমস্যা সমাধানের জন্য দু’টি স্কুলের পরিচালন সমিতি, শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের নিয়ে ডিআইকে বৈঠক বসতে বলেছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অফ স্কুল এডুকেশন সুদর্শন দাস।
এ দিন পৌর বালিকা বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান সুদর্শনবাবু ও আব্দুল হাই। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, পরিচালন সমিতির লোকেদের সঙ্গে সেখানে বৈঠকে বসেন তাঁরা। সেই বৈঠকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারি বন্ধের নির্দেশ দেন ডিআই। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানতে রাজি হননি। |
অবস্থান অভিভাবকদের। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না সিংহ বলেন, “আমাদের স্কুল চত্বরে কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এখানে আছে জুনিয়র বেসিক বা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। সরকারি নির্দেশে প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস ফাইভে ওঠা ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির কথা বলা হয়েছে। সেই আদেশ নিম্নবুনিয়াদি স্কুলের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই সরকারি নির্দেশ মেনেই আমরা আমাদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারি করব।”
ডিআই তখন জানান, তিনি তাঁর দফতরে ফিরে লটারি বন্ধের জন্য লিখিত নির্দেশ পাঠাবেন। কিন্তু স্কুল চত্বরেই তাঁর গাড়ি আটকে দেওয়া হয় পরিচালন সমিটির সদস্য মহম্মদ ইজাজের নেতৃত্বে। পরিচালন সমিতির তরফে বলা হয়, ডিআইকে লটারির সময় উপস্থিত থাকতে হবে। শেষে ডিআই নিম্নবুনিয়াদি স্কুলটি পরিদর্শন করতে গিয়ে জানতে পারেন, ওই স্কুলেই একটি পঞ্চম শ্রেণি রয়েছে। সেখানে গত বছরে মাত্র পাঁচ ছাত্রীকে নিয়ে চলেছে পঠনপাঠন।
স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য মহম্মদ ইজাজ বলেন, “ওই নিম্নবুনিয়াদি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারে ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণি-উত্তীণ ছাত্রীরা। ওদের এখানে ভর্তি করানোর জন্য অভিভাবকেরা চাপ দিচ্ছেন কেন?”
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সুদর্শনবাবু বলেন, “পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি ও লটারি নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় আমি বর্ধমানে আসি। এসে দেখি, একই চত্বরে দু’টি পঞ্চম শ্রেণি চলছে। তার ফলে এই উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে সমস্যা আরও বেড়েছে।”
অভিভাবকদের মধ্যে একজন তরুণকান্তি হাজরা বলেন, “প্রাথমিক আর নিম্নবুনিয়াদি স্কুলের মধ্যে কী পার্থক্য? পৌর বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি মেনে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রীদের ভর্তি না নিয়ে আসলে সরকারি নির্দেশ মানছেন না। আমাদের আন্দোলন চলবে।” |