শহরে নাগরিক পরিষেবা মিলছে না, এমন অভিযোগ তুলে বর্ধমান পুরসভার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করল তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের ডাকা এই পুরসভা অভিযান ঘিরে অশান্তি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় শহরে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুরসভা ভবনেও ছিল প্রচুর পুলিশ।
এই বিক্ষোভ সমাবেশে পুরসভার নানা পরিষেবা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলা হয়। তৃণমূলের তরফে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বর্ধমান শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই জঞ্জাল সাফাই, নর্দমা ও রাস্তা পরিষ্কারের মতো নূন্যতম পরিষেবাও এখন আর পাওয়া যায় না। শহরের ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে আবর্জনা ফেলার জায়গা মিলছে না। অনেক আগেই আবর্জনা ফেলার বিকল্প জায়গা খোঁজা উচিত ছিল। শহরের আবাসন প্রকল্পের জন্য ১২০০ টাকা জমা দিয়েও অনেকে বাড়ি তৈরির সরকারি অনুদান পাচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের কাজ এখনও এই পুরসভায় শুরু করা হয়নি। বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছ দিতেও পুরসভা ব্যর্থ বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। |
পুরসভার সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র। |
তৃণমূলের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি খোকন দাস সমাবেশের শুরুতেই দাব করেন, “রাজ্য সরকার ইচ্ছে করলেই সিপিএম পরিচালিত এই পুরবোর্ড ফেলে দিতে পারে। কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। কয়েক মাস পরে গণতান্ত্রিক পথেই আমরা তা দখল করব।” দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, “তার আগে কেউ সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা নষ্ট করবেন না।”
কয়েক দিন আগে রাজ কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জয়ের পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী-সমর্থকেরা সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই রাতেই সিপিএমের সুভাষপল্লির শহর ২ লোকাল কমিটি অফিসেও তৃণমূলের লোকজন হামলা চালান বলে সিপিএমের অভিযোগ। প্রতিবাদে শনিবার বর্ধমানের বিজয়তোরণ চত্বরে ‘ধিক্কার সভা’ করে সিপিএম। এমন পরিস্থিতিতে এ দিন তৃণমূলের পুরসভা অভিযানকে কেন্দ্র করে গোলমালের আশঙ্কা করেছিল পুলিশ-প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের শহর জোনাল কমিটির এক নেতাও বলেন, “পুরসভায় ভাঙচুরের চেষ্টা প্রতিরোধের জন্য আমরা তৈরি ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত গোলমাল হয়নি। আমরা খুশি।”
পুরসভার চেয়ারম্যান আইনুল হক অবশ্য বলেন, “শহরে নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা দিতেই এ দিন এই কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূল। ওরা যে সব দাবি জানিয়েছে, তার প্রায় প্রতিটিই কাজই সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। বেশ কয়েকটি সমস্যাও মিটতে চলেছে। সেগুলি না জেনেই ওঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমি বলেছি, আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। তাহলে আরও ভাল ভাবে কাজ করা যাবে।” |