রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কর্মচারী সমিতির আসন্ন বৈঠকের পরেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা না মিটলে আন্দোলনে নামার ‘হুমকি’ দিল তৃণমূলের শিক্ষা সেল। ২৮ ডিসেম্বর কলকাতায় শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে ওই বৈঠক হওয়ার কথা। পক্ষান্তরে, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে প্রায় এক বছর পরে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কোনও সমস্যা না হলে ১৭ জানুয়ারি ওই বৈঠক হবে বলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে শনিবার শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন দলের শিক্ষা সেলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সদস্যেরা। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের দার্জিলিং জেলা আহ্বায়ক কৃষ্ণা পাল, বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের নেতা রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেও কর্মচারী সমিতি আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি না হলে শিক্ষা সেল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পাল্টা-অবস্থানে বসবে। শিক্ষা সেলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সদস্য তথা কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি হরিগোপাল মল্লিক বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী বৈঠক ডাকার পরেই কর্মচারী সমিতির আন্দোলন প্রত্যাহার করা উচিত ছিল। কারণ, আন্দোলনের জেরে বহু ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বৈঠকের পরেও আন্দোলন চললে সমস্যা দীর্ঘায়িত হবে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরাতে ২৯ ডিসেম্বর থেকে আমরা পাল্টা-অবস্থান শুরু করব।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবীপ্রসাদ বুট অবশ্য বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে এখনও কোনও লিখিত বার্তা পাইনি। এ ব্যাপারে আগাম কিছু বলতে পারব না।”
লাগাতার আন্দোলনের জেরে গত দু’মাস অচলাবস্থা চলছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও। ছাত্র সংসদের নির্বাচন, আয়-ব্যয় সংক্রান্ত অডিট এবং সেমেস্টারে গরহাজির ছেলেমেয়েদের জরিমানার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার-সহ নানা দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আন্দোলনে নেমেছে। আন্দোলনের জেরে লাগাতার ঘেরাওয়ের আশঙ্কায় অফিসে না গিয়ে কোচবিহার শহরে বাংলোয় বসে কাজ চালাচ্ছেন উপাচার্য অসিত দাস। তাতেই কার্যত বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশি পাহারায় তিনি যাতে অফিসে ঢুকতে পারেন রাজ্যপালের কাছে সেই আর্জি জানাতে রবিবার কলকাতা রওনা হন অসিতবাবু। তাঁর আশ্বাস, “অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের আসন্ন বৈঠকে সেমেস্টারে গরহাজির ছাত্রদের জরিমানা প্রত্যাহারের বিষয় থাকবে। জরিমানা মকুব বা টাকার অঙ্ক কমানোর মতো সুপারিশ বৈঠকে গৃহীত হলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে তোলা হবে।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক বরুণ দত্ত বলেন, “এমন আশ্বাস উপাচার্য আগেও দিয়েছেন। কাজ কিছুই করেননি। যত দূর জানি, ২০১০-এর সেপ্টেম্বরের পরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়নি। উপাচার্য এখন সেই বৈঠক করে সমস্যা মেটাতে চাইলে স্বাগত জানাব। ফের টালবাহানা করলে, বৃহত্তর আন্দোলন হবে।” |