|
|
|
|
কুসংস্কারের বশে রাতভর পড়ে মৃতদেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কেবলমাত্র কুসংস্কারের বশে ১৮ ঘণ্টা ধরে পড়ে রইল মৃতদেহ। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানা এলাকার সরস্বতীপুর গ্রামের। রবিবার দুপুরে পুলিশ-জনপ্রতিনিধিরা গ্রামের মানুষকে অনেক বুঝিয়ে দেহটি সৎকারের ব্যবস্থা করেন।
কারও কুনজরে গ্রামের লোকেদের অনিষ্ট হচ্ছে সম্প্রতি এই ধারণা চেপে বসেছিল ডেবরার সরস্বতীপুরের আদিবাসী পাড়ায়। বিধান নিতে শনিবার সকালে গড়বেতায় জানগুরুর কাছে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলা পেরনোর পরে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে মৃত্যু হয় দু’জনের। আহত হন বেশ কয়েকজন। শনিবার বিকেলে দেহ পৌঁছে দেওয়া হয় বাড়িতে। সাহায্য করার জন্য স্থানীয় বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি ও সমাজসেবী শান্তি টুডু গ্রামে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন, রান্টা মুর্মু নামে এক মৃতের দেহ সৎকার করতে গ্রামের কেউ রাজি হননি। রান্টার মায়ের ‘কু-নজরেই’ গ্রামে অঘটন ঘটেছে বলে এখন ধারণা হয়েছে গ্রামবাসীদের। খবর পেয়েই এ দিন সকালে গ্রামে হাজির হন থানার ওসি কৃষ্ণেন্দু হোতা। বিধায়ক তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে গ্রামে পাঠান শান্তি টুডুকে। শান্তিদেবী গ্রামের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ওসিও সকলকে নিয়ে বৈঠক করেন। অবশেষে গ্রামের মানুষ দেহ সৎকার করতে রাজি হন। শান্তিদেবীর কথায়, “এখনও আমাদের সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে। আমাদের সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য বছরের পর বছর সরকার নানা কথা বলেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেনি। তাই মানুষের দুঃখের দিনেও কুসংস্কারই প্রাধান্য পেল।”
এ দিকে, এখনও গ্রামেই রয়েছেন ‘সন্দেহে’র তালিকায় থাকা মৃত রান্টার মা, বিধবা স্ত্রী ও দুই ছেলে। তাঁদের উপর আবার আঘাত নেমে আসবে না তো? তৃণমূলের বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি বলেন, “যাতে এই ধরনের সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা দলীয় ভাবে যেমন প্রচার চালাব, তেমনই ওই গ্রামে সচেতনতা শিবিরও করা হবে।” |
|
|
|
|
|