দেড় মাসে ১২৭, উদ্বেগ মালদহ সদর হাসপাতালে
ফের তিনটি শিশুর মৃত্যু
ফের শনিবার তিনটি শিশু মারা গিয়েছে মালদহ সদর হাসপাতালে। পর পর দুদিনে মালদহ সদর হাসপাতালে ৯টি শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক বলেন, “শিশু মৃত্যু রুখতে মালদহ সদর হাসপাতালে এসএনসিইউ খোলা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ও মেডিক্যাল কলেজ থেকে অভিন্ন ও সিক নিউ বর্ন বেবি কেয়ার শিশু বিশেষজ্ঞ সহ ১৪ জন চিকিৎসককে মালদহ সদর হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে। এত শিশু বিশেষজ্ঞ দেওয়ার পরেও কেন এমন ঘটল তা নিয়ে তদন্ত হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি।” পাশাপাশি, সদর হাসপাতালে যখন এমন ঘটছে, সেই সময়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সুপার ও ৪ জন সরকারি চাকুরে শিশু বিশেষজ্ঞ জেলার বাইরে। এ খবর জানার পরে স্বাস্থ্য অধিকর্তা দ্রুত সকলকে মালদহে ফিরে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তবে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসাবে প্রবল ঠাণ্ডাকে দায়ী করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত। তিনি বলেন, “যে বাচ্চাগুলি মারা গিয়েছে সেগুলি লো বার্থ ওয়েট ও তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার উপরে হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের শিশুদের কনকনে ঠাণ্ডার জন্য ‘কোল্ড ওয়েভ ইনজুরি হচ্ছে। শিশু মৃত্যুতে কারও গাফিলতি নেই।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ঠান্ডা এড়াতে শিশু বিভাগে ৬টি ওয়ার্মার বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসএনসিইউ ইউনিটের আসন না-বাড়ালে খারাপ অবস্থায় থাকা শিশুদের মৃত্যু হার কমানো যাবে না বলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি। সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুদিনে যে ৯ টি শিশু মারা গিয়েছে তাদের মৃত্যু হয়েছে মাঝরাত থেকে ভোরের মধ্যে। ঠাণ্ডার কারণে মৃত্যু বাড়ার আশঙ্কায় ওয়ার্মার লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও সেই কাজই শুরু হয়নি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৬টি ওয়ার্মার হাসপাতালে বাক্সবন্দি হয়ে রয়েছে। হাসপাতালের বিদ্যুতের লাইন পরীক্ষার পরেই তা বসানো হবে বলে পূর্ত দফতর (বিদ্যুৎ) জানিয়েছে।
হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের রোগীদের আত্মীয়দের অভিযোগ, শিশু বিভাগের অনেক জানালার কাঁচ নেই। কোথাও পলিথিন টাঙানো রয়েছে। কোথাও চট-কাপড় টাঙিয়ে বাতাল রোখার চেষ্টা হচ্ছে। রাতভর হু হু করে ঠাণ্ডা বাতাস ওয়ার্ডে ঢুকছে বলে তাঁদের অভিযোগ। শুক্রবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন কালিয়াচকের জোসেনারা বিবি। রাত ১২ টা নাগাদ তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তিন ঘন্টা পরেই তারা সন্তান মারা যায়। ২২ ডিসেম্বর বামনগোলার সুজলা বিশ্বাস তার ৫ দিনের শিশুকন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। শুক্রবার রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে তার সন্তান মারা যায়। শণিবার সকালে মারা গিয়েছে পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙ্গার ইজান হক (৪)।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ৯ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর মালদহ সদর হাসপাতালে ১২৭ টি শিশু মারা গিয়েছে। যার মধ্যে সদ্যোজাত ২৮ দিনের শিশুর সংখ্যা ১০০ টির বেশি। শিশু মৃত্যুর জন্য বতর্মান সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাধারমণ সামন্ত বলেন, “কম বয়সে বিয়ে, গর্ভবতী অবস্থায় অপুষ্টি, পোয়াতি অবস্থায় মায়েরা ঠিকমতো টিকা না-নেওয়ায় কম ওজনের অপুষ্ট শিশু জন্মাচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সে শিশুদের বাঁচানো যাচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.