২৭ সুপার-স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল
স্বাস্থ্যের স্বাস্থ্য ফেরাতে একগুচ্ছ প্রকল্প মমতার
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পূর্বতন বাম-জমানার ‘অকর্মণ্যতার গ্লানি দূর করতে’ রাজ্যের ১১টি অনগ্রসর জেলায় ২৭টি ‘সুপার-স্পেশ্যালিটি’ হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতার হাসপাতালগুলির উপর রোগীর অত্যধিক চাপ কমাতেই অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিল (বিআরডিএফ) খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ থেকে ওই হাসপাতালগুলি তৈরি করা হবে বলে শনিবার মহাকরণে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতে রাজ্য সরকার নিজের টাকায় চালু করছে নতুন ৭টি ‘স্বাস্থ্য-জেলা’। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে আরও ৫০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া, চিকিৎসকদের গ্রামে যেতে উৎসাহী করতে তাঁদের জন্য বেশ কয়েকটি বাড়তি সুবিধার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। যে সব সরকারি চিকিৎসক তিন বছর দুর্গম ও অনগ্রসর এলাকায় কাজ করেছেন, তাঁদের জন্য এখন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা স্তরে যথাক্রমে ৪০ ও ৫০ শতাংশ কোটা থাকবে। এ ছাড়া, নম্বরের ক্ষেত্রে তাঁদের ৩০ শতাংশ ‘ওয়েটেজ’ দেওয়া হবে। ক্ষমতায় আসার পর গত সাত মাসে জঙ্গলমহল, দার্জিলিঙ, শিল্প ও শিক্ষা ক্ষেত্রে জটিলতা কাটাতে একের পর এক বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার রাজ্যকে পোলিওমুক্ত করা, মা ও শিশুদের ব্যাপারে বাড়তি স্বাস্থ্য পরিষেবা, একটু জটিলতা দেখা দিলেই রোগীদের কলকাতায় পাঠানোর প্রবণতা বন্ধ করতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রথম দফায় তাঁর এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডায়মন্ড হারবার, বসিরহাট, ঝাড়গ্রাম, আসানসোল, রামপুরহাট, নন্দীগ্রাম এবং বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে আগামী বছরের গোড়া থেকেই চালু হয়ে যাবে নতুন ৭টি স্বাস্থ্য জেলা।”
অনগ্রসর ১১টি জেলায় ২৭টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি করতে খরচ পড়বে মোট দুই হাজার কোটি টাকা। এগুলি হবে বাঁকুড়া (বিষ্ণুপুর, ছাতনা, বড়জোড়া, ওন্দা), বীরভূম ( বোলপুর, রামপুরহাট), দক্ষিণ দিনাজপুর (গঙ্গারামপুর), জলপাইগুড়ি ( মাল, ফালাকাটা), মালদহ (চাঁচল), পশ্চিম মেদিনীপুর (ডেবরা, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, শালবনি, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর), পূর্ব মেদিনীপুর (এগরা, পাঁশকুড়া), মুর্শিদাবাদ (সাগরদিঘি, জঙ্গিপুর, ডোমকল), পুরুলিয়ায় (রঘুনাথপুর), দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (বারুইপুর, কাকদ্বীপ, মেটিয়াবুরুজ, ডায়মন্ডহারবার) এবং উত্তর দিনাজপুরে (ইসলামপুর)। টেন্ডারের প্রক্রিয়া এবং জমি বাছাইয়ের কাজ সারা হলেই ওই সব হাসপাতালের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বাকি ৯টি জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন নিজের টাকায় করবে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাসপাতালে প্রসূতি, মা ও সদ্যোজাত শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো আরও জোরদার করতে চিকিৎসক ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্ক ফোর্সের প্রধানকে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বিনা পারিশ্রমিকে ওই টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে মা ও শিশুদের চিকিৎসার পরিষেবা সরেজমিনে যাচাই করে দেখছেন। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে রাজ্যে অসুস্থ সদ্যোজাত শিশুদের বিশেষ চিকিৎসা করার জন্য ৬টি মাত্র ইউনিট ছিল। গত সাত মাসে তা দ্বিগুণ করা হয়েছে।” নতুন ৬টি ইউনিট খোলা হয়েছে বি সি রায় শিশু হাসপাতাল, এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল, হাওড়া, বহরমপুর, মালদহ ও শিলিগুড়িতে। আগামী বছরের মধ্যে সারা রাজ্যে এ ধরনের মোট ৪০টি ইউনিট চালু হয়ে যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। মমতা বলেন, “শিশু ও প্রসূতি মৃত্যুর হার আরও কমাতেই হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যকে ১০০ ভাগ পোলিওমুক্ত করার লক্ষ্যেও কাজ করবে রাজ্য সরকার। ১ জানুয়ারি থেকে জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকে মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট চালু হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.