অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার লটারি করে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে গেল মালদহের বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। অভিভাবকদের বিক্ষোভ থামাতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পুলিশ ডাকতে হয়। বিক্ষোভকারী অভিভাবকদের সামাল দিতে পুলিশকে হিমসিম খেতে হয়। প্রায় ঘন্টাখানেক ধস্তাধস্তির পরে পুলিশ বিক্ষোভকারী অভিভাবকদের কোনও রকমে স্কুল থেকে বের করে পরিস্থিতির সামাল দেয়। মঙ্গলবার ছিল মালদহ শহরের বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির দিন। লটারিতে মেয়েদের ভর্তি করাতে সকাল থেকে স্কুলে অভিভাকদের ভিড় উপচে পড়েছিল। স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ২০০টি আসন। ওই স্কুলেরই সকালে প্রাথমিক স্কুলের ৪৪ জন ছাত্রীকে ভর্তি নেন। এর পরে বাকী ১৫৬ জন ছাত্রীর ভর্তির জন্য লটারি শুরুর আগে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। তখন শহরে কিছু অভিভাবকের সঙ্গে গ্রামের অভিভাবকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। |
ছবি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়। |
লটারি শুরু হতেই শহরের অভিভাবকেরা দাবি তোলেন গ্রামের ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া চলবে না। অন্যদিকে গ্রামের অভিভাবকদের দাবি, গ্রাম-শহর একসঙ্গে লটারি করতে হবে। এরপরই শহর ও গ্রামের অভিভাবদের বচসা থেকে গোলমাল ব্যাপক আকার নেয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে আশঙ্কায় তড়িঘড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বিমল পান্ডে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করে ঘোষণা করেন, যা পরিস্থিতি তাতে লটারি করা সম্ভব নয়। আগামী ২৭ ডিসেম্বর ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধের ঘোষণা করতেই শহর ও গ্রামের অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। ছুটে আসে পুলিশ। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে লটারির মাধ্যমে আজ বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি ছিল। অভিভাবদের বিক্ষোভের জেরে ভর্তি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১১২৩টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। যার ৪৬০টি আবেদন ছিল গ্রামের। স্কুল থেকে ২ কিমির মধ্যে বসবাসকারী ছাত্রীরা লটারিতে অংশ নিতে পারবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করতেই শহরে বাস করে দু’কিমি-র বাইরে থাকা অভিভাবকেরা ফেটে পড়ে। ঝলঝলিয়া, গয়েশপুরে বলবাসকারী অভিভাবদের অভিযোগ, “আমাদের বাড়ি পাশে মেয়েদের কোনও স্কুল নেই। শহর থেকে কেন আমাদের মেয়েরা এই লটারির সুযোগ পাবে না? অথচ স্কুল থেকে এক কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকেও লটারির সুযোগ পাচ্ছে। সরকারি এই নিয়ম আমরা মানি না। মালদহ শহর লাগোয়া সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, সরকারি নিয়ম মেনে আমাদের মেয়েদের লটারির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা প্রণতি দাসগুপ্ত বলেন, “সরকারি নিদের্শ মেনে লটারি করব এবং লটারিতে যাদের নাম উঠবে তারাই স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবে।” |