ভাল নেই সুরবালারা
য়নাগুড়ি: ইন্দিরা আবাসে ঘর পেয়েছেন? না। বিপিএল তালিকায় নাম আছে? না। সিডিউল কাস্ট সার্টিফিকেট আছে? সেটা কী? উদাস তাকিয়ে রইলেন সুরবলা রায়। বয়স ৭০ ছুঁয়েছে। উঠোনে পাতা ছেঁড়া মাদুরে ১২ বছরের নাতি মনোজ জ্বরে কাঁপছে। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “দু’বেলা পেট পুরে খেতে পাই না। কেউ দেখে না।” কেন? সাহায্যের আশায় দোরেদোরে ঘুরে ক্লান্ত বৃদ্ধার উপলব্ধি, উপোসে দিন কাটলেও বিপিএল তালিকায় নাম নেই। তাঁদের বাড়ি আছে। তাই কেউ খোঁজ নেয় না। ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা-১ পঞ্চায়েতের যামপাড়ার এক প্রান্তে তিন দিকে পাটকাঠির বেড়া দেওয়া তিনটি চালা ঘর। মাঝে একফালি উঠোনে বৃদ্ধার আরাধ্য কালী-বিষহরির থান। রয়েছে তুলসী থান, ফুলের গাছ। ছেড়া কালো প্লাস্টিকে মোড়া চালে ফনফনিয়ে বেড়েছে লাউ ডগা। বেড়ায় ঝুলছে মাছ ধরার জাল। সুরবালা দেবী যে জমিতে থাকেন সেটাও নিজের নয়।
নিজস্ব চিত্র
তিনি জানান, স্বামী পূণ্য রায় শহরের এক ব্যক্তির জমি চাষের কাজ করতেন। তিনি ৪ ডেসিমেল জমিতে মৌখিকভাবে থাকতে দেন। সেই থেকে যমপাড়ায়। চার বছর আগে স্বামী মারা যান। একমাত্র ছেলে প্রবীণ অসুস্থ। একটি হাত অসাড়। ওই শরীর নিয়ে কাজের খোঁজে গ্রামে ঘুরে বেড়ান তিনি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে যুবক বলেন, “অনেকে দয়া করে হাল্কা কাজ দেয়। কিছু পয়সা জোটে।” সংসার সামাল দিতে নিরুপায় প্রবীণের স্ত্রী পূর্ণিমা দেবী দিনমজুরির কাজ করেন। গ্রামের আশপাশের বাড়িতে আলো এলেও সুরবালা দেবীর ভরসা কুপি। কেরোসিনের অভাবে সেটাও প্রায় দিন জ্বলে না। তখন শাশুড়ি, স্বামী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন পূর্ণিমা দেবী। কিন্তু আঁধারে ডুবে থেকেও ছেলে মনোজকে শিক্ষিত করে তোলার আশা ছাড়েননি ওই গৃহবধূ। সুভাষনগর হাই স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়ছে মনোজ। পূর্ণিমা দেবী বলেন, “ছেলেটাকে বই পড়ানোর খুব ইচ্ছা। ওর জন্য সকাল থেকে দৌড়ে বেড়াই।” বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই কেন সুরবালা দেবী জানেন। তিনি বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের বাবুরা বলেন আমরা এপিএল। টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ নিতে হবে। পেটের ভাত জোটে না তো বিদ্যুৎ নেব কেমন করে!” বিপিএল তালিকায় নাম না-তুলে কে আপনাদের এপিএল তালিকাভূক্ত করেছে? বৃদ্ধা। বলেন, “জানি না।” বিপিএলের জন্য আবেদন করেছেন! তাঁর দাবি, “কত বার বলেছি। কে শুনছে!” এই পরিবারের দুর্দশার কথা জানেন কেপিপি পঞ্চায়েত সদস্য গণেশ রায়। তিনি বলেন, “খুব খারাপ পরিস্থিতিতে দিন কাটছে। বিপিএল তালিকায় নাম না-থাকায় সরকারি সাহায্য পৌছে দিতে পারছি না। কয়েক বার আবেদন করেও লাভ হয়নি।” কী বলছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা! ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি জানতাম না। ফেব্রুয়ারিতে ওঁরা বিপিএল তালিকাভূক্ত হবে। তাঁর আগে চাল, কাপড়-সহ অন্য সাহায্য পাবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.