পরীক্ষা পিছোতে মমতার কাছে যাবেন শ্রমিক নেতারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় রেখেই রাজ্য সরকার ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ অব্যাহত রইল।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ‘সাধারণ ধর্মঘটে’র ডাক দিয়েছে দেশের ১১টি শ্রমিক সংগঠন। কিন্তু ওই দিনই রাজ্যে মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা হওয়ার কথা। শ্রমিক সংগঠনের নেতারা, বিশেষ করে সিটু-এআইটিইউসি নেতারা চাইছেন, রাজ্য সরকার পরীক্ষা এক দিন পিছিয়ে দিক। কিন্তু রাজ্যের তরফে এ বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে ছিলেন, পরীক্ষার দিন বদল হবে না। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘শেষ অনুরোধ’ জানাতে আগামী ৯ জানুয়ারি সব শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা কলকাতায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন বলে ঠিক করেছেন। কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র সভাপতি এন সঞ্জীব রেড্ডি নিজে ওই দিন কলকাতায় শ্রমিক সংগঠনগুলোর সম্মেলনে যোগ দিতে কলকাতায় যাবেন।
তা সত্ত্বেও রাজ্য পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে রাজি না হলে কী হবে? সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের জবাব, “রাজ্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতেই পারে। এর আগে বহু বার ধর্মঘটের জন্য পরীক্ষা পিছনো হয়েছে। তা হলেও পরীক্ষা পিছনো না হলে রাজ্য স্তরে নেতারা আলোচনা করে ঠিক করবেন।” বাম শ্রমিক সংগঠন-সূত্রে ইঙ্গিত, সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে পরিবহণ ক্ষেত্রকে ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হবে। কিন্তু প্রথমেই এ বিষয়টি খোলসা করতে রাজি নন বাম নেতারা। রাজ্য সরকারকে চাপ দিতে এ নিয়ে ধোঁয়াশাই বজায় রাখতে চান তাঁরা। রেলকে অবশ্য সারা দেশেই সাধারণ ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে। রেলের কর্মচারী শ্রমিক সংগঠনগুলিকে যেমন ধর্মঘটে যোগ দিতে বলা হচ্ছে না, তেমনই কেন্দ্রীয় স্তর থেকে রেল অবরোধের কর্মসূচিও রাখা হবে না।
এআইটিইউসি নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তাঁর যুক্তি, আগামী বছরটি লিপইয়ার। ২৯ ফেব্রুয়ারি অন্য কোনও পরীক্ষাও নেই। তাই ওই দিনে পরীক্ষা হতেই পারে। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে শিক্ষা দফতর তথা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু কোনও ভাবেই ধর্মঘট পিছনো হবে না। কারণ, আগামী বছরের সাধারণ বাজেট পেশ হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি। তার আগের দিনই কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতি ও শ্রমিক আইন না মানার বিরুদ্ধে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে মনমোহন সিংহকে কড়া বার্তা দিতে চাইছেন বাম-নেতারা। এ বিষয়ে তাঁদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছেন সঞ্জীব রেড্ডি। বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বিএমএস এবং বাম-নেতাদের পাশে বসিয়ে আজ কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য রেড্ডি মনমোহন-সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করেছেন। |