যৌথ অভিযান ঝাড়খণ্ড সীমানায়
‘নিখোঁজ’ মাওবাদীর কোর্টে ‘আত্মসমর্পণ’ ঘিরে তীব্র ধন্দ
পুলিশ বলছে, বছর আঠাশের যুবকটি মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্য। সঙ্গী ছিলেন নিহত মাওবাদী নেতা শশধর মাহাতোর। সুচিত্রা মাহাতোর স্কোয়াডেও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ওই যুবক। শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা, অস্ত্র লুঠ থেকে শুরু করে খুন, অপহরণ, হামলা-নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহের বহু মামলায় ‘ওয়ান্টেড’। সেই যুবকই পরোয়ানা জারি হওয়া খুনের মামলায় একা আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করলেন। আদালত যুবককে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। অন্য মামলায় জেরার জন্য এ বার তাঁকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ যাঁকে মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য ‘চায়না’ বলে দাবি করছে, সেই যুবকের আইনজীবী আবার জানাচ্ছেন, তাঁর মক্কেল চায়না নয়। তিনি সুবোধ হাঁসদা। বাড়ি বিনপুরের কাঁকো অঞ্চলের লক্ষ্মণপুরে। গত বছর ১৩ মে বিনপুরেরই চাঁদাবিলার ৪ সিপিএম-কর্মী খুন হয়েছিলেন। সেই মামলার এফআইআরে নাম না-থাকলেও সুবোধের নাম রয়েছে চার্জশিটভুক্ত ২০ জনের মধ্যে। পরোয়ানা জারি হয়েছিল, তাই মঙ্গলবার সুবোধ ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে আসেন বলে দাবি তাঁর আইনজীবী কৌশিক সিংহের। পরোয়ানাতেও শুধু ‘সুবোধ হাঁসদা’ই আছে, ‘চায়না’র উল্লেখ নেই বলে জানান আইনজীবী। তাঁর মক্কেলের জামিনের জন্যও আবেদন করেন কৌশিকবাবু। বিচারক রোহন সিংহ অবশ্য সে আবেদন মঞ্জুর করেননি।
সুবোধ হাঁসদা।
নিজস্ব চিত্র
এই সুবোধকেই ‘চায়না’ বলে দাবি করে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, “মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য সুবোধ হাঁসদা ওরফে চায়নার বিরুদ্ধে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা-সহ বহু অভিযোগই রয়েছে। ওই সব মামলায় তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে জেরার জন্য আদালতে আবেদন করাও হবে।” এ দিন আদালতে চায়নার আত্মসমর্পণ করতে আসার খবর তাদের জানা ছিল না বলে দাবি পুলিশের। অথচ গত দু’বছরে এই চায়নাকে ধরার জন্য জঙ্গলমহলে বহু বার চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। এমন এক জনের একা একা আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করা নিয়ে তাই ধন্দ তৈরি হয়েছে। পুলিশের অবশ্য ব্যাখ্যা, এলাকার মাওবাদী-জনগণের কমিটির সদস্যরা একের পর এক ধরা পড়ায় এবং আত্মসমর্পণ করায় চায়নার আত্মসমর্পণও ‘অনিবার্য’ হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে কিষেণজি নিহত হওয়ার পরে আরও অনেক মাওবাদী নেতা-নেত্রী ‘আত্মসমর্পণ করবেন’ বলেও দাবি করছে পুলিশ।
এই ‘অনুকূল পরিস্থিতি’র সুযোগেই ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমানা লাগোয়া জঙ্গলে মাওবাদী-ঘাঁটির খোঁজে সোমবার থেকে এক সঙ্গে অভিযানও শুরু করেছে দুই রাজ্যের পুলিশ। অভিযান চলাকালীন এক রাজ্যের জঙ্গল থেকে পাশের রাজ্যের জঙ্গলে মাওবাদীদের গা-ঢাকা দেওয়া বন্ধ করাই এই যৌথ অভিযানের লক্ষ্য। অভিযান চলছে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভুম জেলার ঘাটশিলা লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার বান্দোয়ান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁকড়াঝোড়, বেলপাহাড়ির জঙ্গলে। দুই রাজ্যের সীমানা-ঘেঁষা জঙ্গলে দুই রাজ্যের যৌথ অভিযানের কথা স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছু জানাতে চাইছেন না কোনও রাজ্যের পুলিশ-কর্তারাই। পূর্ব সিংভূম জেলা পুলিশের এসএসপি অখিলেশ ঝা শুধু বলেন, “প্রতিবেশী দুই রাজ্যের সীমানা সংলগ্ন জঙ্গলে একই সঙ্গে অভিযান শুরু হয়েছে ঠিকই, তবে অভিযান চলাকালীন এর বেশি বলা সম্ভব নয়।” এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার চাঁপাশোলের জঙ্গল থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি, একটি দেশি বন্দুক ও একটি টিফিন বাক্স উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, লাগাতার তল্লাশিতে চাপে পড়ে মাওবাদীরাই এই সব অস্ত্র ফেলে পালিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.