চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম জয়ন্ত সরকার (২৫)। বাড়ি ধানতলা থানার আড়ংঘাটা এলাকায়। সোমবার গভীর রাতে হাঁসখালি থানার ময়ূরহাট বাজারে তাঁকে গণপিটুনি দিতে শুরু করে একদল গ্রামবাসী। এরই মধ্যে কয়েকজন গ্রামবাসীর চেষ্টায় ওই যুবককে উদ্ধার করে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ ওই রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, ‘‘চোর সন্দেহে ওই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’ ময়ূরহাট বাজার কমিটির সম্পাদক সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘বেশ কয়েকদিন ধরেই বাজারে চুরি হচ্ছিল। তাই রাতেই কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের নিজেদের দোকানে থাকতে শুরু করেন। এদিন গভীর রাতে আচমকা একটি জুতোর দোকানে তালা ভাঙার শব্দ হলে তাঁরা জেগে যান।’’ ব্যবসায়ীদের চিৎকারে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজন ধরা পড়ে যান। বাজারের ভিতরেই শুরু হয় গণপিটুনি। ঘটনাস্থলের কাছেই বাড়ি ময়ূরহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিমা বসুর বাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘এদিন প্রায় ১৫টি দোকানে চুরি হয়েছে। চোরকে হাতে পেয়ে মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নেন। তবে কিছু শুভ বুদ্ধির মানুষ ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল।’’
একই সঙ্গে সোমবার রাতেই কৃষ্ণনগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় লরি চোর সন্দেহে আরও এক যুবককে গণপিটুনি দিল জনতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিনই বেশ কিছু লরি দাঁড়িয়ে থাকে। এদিন গভীর রাতে পাশের একটি লরির আলো জ্বলে ওঠে। পাশের লরিতে শুয়েছিল এক লরি শ্রমিক। তার সন্দেহ হওয়াতে সে চিৎকার শুরু করে। বাকিরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যায় ওই যুবক। শুরু হয় গণপিটুনি। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই যুবকের নাম পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। মাথায় আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি শান্তিপুর থানার গয়েশপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশ অবশ্য ঘটনার দিনই একজনকে গ্রেফতার করে। পরপর গণপিটুনির ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন জেলার পুলিশ প্রশাসন। |