বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচের মুখে দাঁড়িয়ে সচিন তেন্ডুলকরের শততম সেঞ্চুরি নিয়ে ফের গবেষণা চালু হয়ে গেল। খোদ সচিনের শহরে দাঁড়িয়ে এ বার মাইক ব্রিয়ারলি বললেন, “এত দূরে বসে সচিনের মানসিক অবস্থার আন্দাজ পাওয়া কঠিন। তবে ওকে দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে যেন চাপে রয়েছে।”
শততম সেঞ্চুরি নিয়ে সচিনের ওপর চাপ তৈরি করতে মাঠে নেমে পড়েছে অস্ট্রেলিয়াও। প্রাক্তন অফস্পিনার অ্যাশলে ম্যালেট বলেছেন, সচিনকে সমস্যায় ফেলার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সেরা অস্ত্র হতে পারেন নাথন লিয়।ঁ “খুব বড় একটা টেস্ট খেলতে নামছে লিয়। কিন্তু আমি মনে করি এক জন ভাল অফস্পিনার সচিনকে অনেক বেশি সমস্যায় ফেলতে পারে। এক জন ভাল লেগস্পিনারকে ও ঠিক খেলে দেবে।” ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ম্যালেট যে, সচিন ভেতরে আসা বলের চেয়ে বাইরে যাওয়া বল বেশি ভাল খেলেন। পরিসংখ্যান যদিও পুরোপুরি ম্যালেটের বক্তব্যকে সমর্থন করছে না। টেস্টে মুরলীধরনের বলে সবথেকে বেশি বার আউট হলেও অফস্পিনারকে খুব বেশি উইকেট দিয়েছেন সচিন, এমন তথ্য কিন্তু পরিসংখ্যান ঘেঁটে পাওয়া যাচ্ছে না। |
সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেট-মস্তিষ্ক হিসেবে গণ্য হওয়ার পাশাপাশি ব্রিয়ারলির আর একটা পরিচিতি হচ্ছে, তিনি পেশায় মনোরোগ-বিশেষজ্ঞ। সোমবার রাতে মুম্বইতে রাজ সিংহ দুঙ্গারপুর বিশ্ব ক্রিকেট সমাবেশে বক্তব্য রাখতে এসেছিলেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে হাজির থাকা ইয়ান চ্যাপেল আবার বলেছেন, ভারতের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জেতার এটাই সেরা সুযোগ। ইয়ান বলেন, “ভারতীয় দলকে বুঝতে হবে যে, অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জেতার এটাই সবচেয়ে ভাল সুযোগ। এই অস্ট্রেলিয়া টিম এখনও দু’এক দিন ভাল খেলে দিতে পারে কিন্তু ওদের কোনও ধারাবাহিকতা নেই।” বীরেন্দ্র সহবাগ এবং জাহির খানকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় অস্ত্র হিসেবে বেছেছেন ইয়ান চ্যাপেল। তাঁর মন্তব্য, “সহবাগ এমন এক জন ব্যাটসম্যান যে প্রতিপক্ষ বোলারের রাতের ঘুম কেড়ে নেবে। ও বড় রান করে আর তাড়াতাড়ি রান করে। আর জাহির নতুন বলে উইকেট তুলতে পারে।”
পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে সদ্য প্রয়াত মনসুর আলি খান পটৌডি নিয়েও স্মৃতিচারণ করেছেন ইয়ান। বলেন, “টাইগার ছিল খুব আকর্ষণীয় আর চিন্তাশীল ক্রিকেটার। ভারতীয় ক্রিকেটে ওকে প্রশাসক হিসেবে আরও ভাল ভাবে ব্যবহার করা যেত।” সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, “আর ব্যাটসম্যান পটৌডি এমনিতেই একটা চোখে খেলত। সাতষট্টির অস্ট্রেলিয়া সফরে মেলবোর্ন টেস্টে এর সঙ্গে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে ব্যাট করে ও দু’ইনিংসে ৭৫ আর ৮৫ রান করেছিল। যার একটা ইনিংসে ভারত ২৫-৫ অবস্থায় ব্যাট করতে নেমেছিল পটৌডি। ম্যাকেঞ্জির মতো ফাস্ট বোলারকে ব্যাকফুটে বাউন্ডারি মেরেছিল যে পা ফিট ছিল, সেই পায়ে শরীরের ওজন মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে। ভাবা যায় না এমন ব্যাটিং!” |
ব্রিয়ারলি আবার বলছেন সচিনকে নিয়ে। “সচিনের যে ব্যাপারটা আমার সবথেকে ভাল লেগেছে তা হচ্ছে, ২০০৬-এর ইংল্যান্ড সফরে ও সেরা ফর্মে ছিল না। কনুইয়ের চোট থেকে সেরে মাঠে ফিরছিল তখন। তার পরেও কিন্তু লড়াই করে নব্বই মতো কয়েকটা স্কোর করে এসেছিল।” শততম সেঞ্চুরি নিয়ে এর পর তিনি বলেন, “ক্রিকেট খেলাটাকে যে এত সহজ করে দিতে পারে তার জন্য এটা একটা অসাধারণ সম্মান হবে।”
রাহুল দ্রাবিড়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেন, “রাহুলকে দেখে আমার দারুণ এক জন মানুষ আর অসাধারণ এক ক্রিকেটার মনে হয়। ও অসম্ভব সাহসী। লড়াই করতে জানে। ওকে দেখে খুব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মনে হয়। আমি নিশ্চিত ভীষণ শক্ত একটা মন রাহুলের আছে।” |