এক দিকে, অবনমন বাঁচানোর সংকল্প। ছ’পয়েন্ট এলে ভাল, কিন্তু যে করেই হোক তুলতে হবে তিন। অন্য দিকে, মোতিবাগের পিচ নিয়ে তৈরি হওয়া আচমকা ধোঁয়াশা।
রঞ্জি ট্রফির অন্তিম ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে জোড়া অঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলা ক্রিকেট।
তবে পয়েন্টের হিসেবনিকেশ নয়, বরোদার বিরুদ্ধে নামার আগে নতুন উদ্ভুত সমস্যা বলে যদি কিছু থাকে তো সেটা মোতিবাগের পিচ। পাশাপাশি দু’টো পিচ রাখা আছে। একটায় অল্প ঘাস। অন্যটায় ঘাস কিছুটা বেশি। মঙ্গলবার সাতসকালে প্র্যাক্টিসের সময় তো নয়ই, এমনকী সন্ধে পর্যন্ত বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট জানতে পারেনি কোন পিচে নামতে হচ্ছে শেষ ম্যাচে। কোচ ডব্লিউ ভি রামনও বলে দিয়েছেন, “কোন পিচে নামব জানি না। বুধবার সকালে দেখি কোনটায় খেলতে হয়। সেই বুঝে প্রথম এগারো ঠিক করব।” মোটামুটি যা খসড়া, তাতে দু’টো বদল হচ্ছে। অনুষ্টুপ মজুমদার এবং জয়জিৎ বসু সম্ভবত ঢুকছেন টিমে। বোলিংয়ে তিন পেসার-এক স্পিনারের পুরনো ছক। সামি-দিন্দা-বীরপ্রতাপের সঙ্গে ইরেশ সাক্সেনা।
|
মনোজ: মোতিবাগেও
বাংলার প্রধান ভরসা |
‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচে পিচ নিয়ে বাংলাকে এমন ধোঁয়াশায় রেখে দেওয়ার পিছনে কারণ একটাই। ইরফান পাঠান। ‘বড়’ পাঠান এই ম্যাচে নেই। চোটের কারণে ইউসুফ পাঠান অনেক দিন ধরেই চলতি রঞ্জির বাইরে। কিন্তু ‘ভাই’ ইরফান আছেন, এবং সুইং বোলিংয়ে যথেষ্ট নাজেহাল করে চলেচেন বিপক্ষদের। চলতি মরসুমে বরোদার হয়ে চারটে ম্যাচে ইরফান পেয়েছেন ২১। কিন্তু বাংলার বিরুদ্ধে তাঁর নামা নিয়ে হঠাৎ করেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, ইরফানের বুকে চোট আছে। এ দিন বাংলা প্র্যাক্টিস করে যাওয়ার পর পিচ দেখতে এলে কী হবে, প্র্যাক্টিসে নামেননি ইরফান। বাংলা শিবিরের কাছে খবর, ইরফানের নামার সম্ভাবনা আছে ঠিকই, কিন্তু ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তারা ধরেই নিচ্ছে, ইরফান খেললে ঘাসের উইকেটে ঠেলে দেওয়া হবে বাংলাকে। আর না খেললে হয়তো বেছে নেওয়া হবে পাশেই সাজিয়ে রাখা ব্যাটিং-বন্ধু পিচকে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পক্ষে পিচ দেখা সম্ভব ছিল না। কারণ তিনি বডোদরা ঢুকেছেন রাতের দিকে। টিমের কেউ কেউ মনে করছেন, এই উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে টস। কারণ সকালের দিকে বল ‘মুভ’ করতে পারে ভাল রকম। টস জিতলে তাই বোলিং নেওয়াটাই ভাল।
এই মুহূর্তে গুজরাতের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গ্রুপ টেবিলের তলানিতেই আছে বাংলা। ৫ ম্যাচে পয়েন্ট ৮। তামিলনাড়ু (৫ মাচে ১৭) এবং মধ্যপ্রদেশ (৫ ম্যাচে ১৬) ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরের পর্বে যাওয়া এবং অবনমন রক্ষাদু’টোর লড়াই-ই এখন পরের চারটে দলের মধ্যে। ৫ ম্যাচে হরিয়ানার পয়েন্ট ৯। সমসংখ্যক ম্যাচে গুজরাতের ৮ পয়েন্ট। এই দু’টো টিম আবার নিজেদের মধ্যে শেষ ম্যাচ খেলছে। দিল্লি ৬ ম্যাচে ১১। বাংলা তিন পয়েন্ট নিলেই ধরে ফেলবে দিল্লিকে। আর ছ’পয়েন্ট তুললে? টপকে যাবে বরোদাকেও (৫ ম্যাচে ১৩)। খুলে যাবে কোয়ার্টার ফাইনালের দরজা। বরোদা রওনা হওয়ার আগে সৌরভ বলছেন, “বরোদা ভাল টিম। জিততে গেলে আমাদের ভাল খেলতে হবে।” কিন্তু অধিনায়কের গলায় সতর্কতা থাকলে কী হবে, কোচ রামন সাফ বলছেন, “তিন নয়, ছ’পয়েন্ট তুলতে হবে। অবনমন নিয়ে ভাবছিই না।”
স্বাভাবিক। অধিনায়ক সৌরভ আছেন। তিন ম্যাচে ৫৮৬ রান করা মনোজ তিওয়ারি আছেন। বিপক্ষে আছে ইরফানকে নিয়ে সংশয়। বাংলা এখন আত্মবিশ্বাসী হবে না তো কবে হবে? |