|
|
|
|
শিক্ষা দফতরে নালিশ, ভর্তির সময়ে ‘অতিরিক্ত’ ফি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
‘অ্যাডমিশন-ফি’ নেওয়া নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে মেদিনীপুরের একের পর এক স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরোধ শুরু হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি শুরু হতেই শহর ও শহরতলির বেশ কয়েকটি স্কুলে এই বিরোধ সামনে এসেছে। অভিভাবকদের বক্তব্য, সরকারি নির্দেশেই বলা হয়েছে, কোনও স্কুল ‘অ্যাডমিশন ফি’ নিতে পারবে না। এমনকী, ভর্তির আগে স্কুল থেকে যে ফর্ম দেওয়া হয়, তার জন্যও আলাদা ভাবে ‘ফি’ নেওয়া যাবে না। অথচ, অধিকাংশ স্কুল-কর্তৃপক্ষই এই নির্দেশ উপেক্ষা করছেন বলে অভিযোগ। যেখানে বছরে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা নেওয়া যেতে পারে, কোনও কোনও স্কুল সেখানে তার থেকে তিনশো, চারশো, পাঁচশো টাকা বেশি দাবি করছে বলে অভিযোগ।
স্কুল-কর্তৃপক্ষের পাল্টা বক্তব্য, ‘অ্যাডমিশন ফি’ নেওয়া হচ্ছে না। যা নেওয়া হচ্ছে তা ‘ডেভলপমেন্ট ফি’, স্পোটর্স-সহ বিভিন্ন খাতের ফি। কিন্তু বিতর্ক থামছে না। জল গড়িয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর পর্যন্ত। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড়ের বক্তব্য, “ভর্তির সময়ে কয়েকটি স্কুল অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। শুধুমাত্র মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতেই কয়েকটি ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিষয়টির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
অভিভাবকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও ‘অতিরিক্ত ফি’ নেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। মঙ্গলবার যেমন ডিএসও-র এক প্রতিনিধি দল মেদিনীপুর টাউন স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করে ‘অতিরিক্ত ফি’ নেওয়ার বিরোধিতায় সরব হয়। ডিএসও-র জেলা নেতা কুমারেশ দে বলেন, “এখানে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ছাত্রদের কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অনেকেরই এই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই। তা ছাড়া, যেখানে সরকারি নির্দেশ রয়েছে অ্যাডমিশন ফি নেওয়া যাবে না, সেখানে কেন এই পরিমাণ টাকা নেওয়া হবে?” স্কুল সূত্রের বক্তব্য, অ্যাডমিশন ফি নয়, ডেভলপমেন্ট-স্পোটর্স সহ বিভিন্ন খাতেই টাকা নেওয়া হচ্ছে। স্কুল পরিচালন সমিতির এক সদস্যের কথায়, “ইলেকট্রিকের জন্য স্কুল আলাদা কোনও টাকা পায় না। ছাত্রদের কাছ থেকে ভর্তির সময়ে যে টাকা নেওয়া হয় তা দিয়েই বিল মেটানো হয়। গত ৩ মাসে স্কুলের ইলেকট্রিক বিল হয়েছে ২৩ হাজার টাকা। ভর্তির সময়ে এই টাকা না-নিলে তো সমস্যা!”
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক বলেন, “সরকার বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব নিলে আমরা ছাত্রদের কাছ থেকে কোনও টাকা নেব না।” বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালিকা)-সহ শহর ও শহরতলির বেশ কয়েকটি স্কুলেই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। শুধু অ্যাডমিশন ফি-ই নয়, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়েও বেশ কয়েকটি স্কুলে সমস্যা এখনও রয়েছে। শিক্ষা দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে সমস্যার সুযোগ নেই। সরকারি নির্দেশ মতো স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে লটারিই করতে হবে। জেলার অধিকাংশ স্কুলে ইতিমধ্যেই লটারি হয়ে গিয়েছে। তবে, কোনও স্কুলে যদি চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়, তা হলে সেই প্রাথমিকের ছাত্রছাত্রীরা সেই স্কুলেরই সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দাবি, “ভর্তি প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবেই চলছে। এ ক্ষেত্রে নতুন করে কোনও অভিযোগ আসেনি।” |
|
|
|
|
|