নিজস্ব সংবাদদাতা • উলুবেড়িয়া |
উলুবেড়িয়ার গরুহাটা থেকে শ্যামপুরের গড়চুমুক ৫৮ গেট পর্যন্ত রাস্তার হাল শোচনীয়। রাস্তার এই অংশটুকুর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কিলোমিটার। বর্ষার ঠিক আগে জোড়াতালি দিয়ে রাস্তাটি মেরামত করা হলেও ফের অবস্থা যে কে সেই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যর পূর্ত (সড়ক) দফতরের অধীন এই রাস্তাটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যের অন্যতম সেরা পর্যটনকেন্দ্র গাদিয়াড়ায় যাতায়াতের অন্যতম প্রধান রাস্তা এটি। গড়চুমুকেও রয়েছে পর্যটনকেন্দ্র। সেখানেই তৈরি করা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানাও। ফলে পর্যটকরা সারা বছর এই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। শীতকালে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে। শীতের মরসুমে গড়চমুক এবং গাদিয়াড়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ চড়ুইভাতি করতে আসেন। |
শুধু তাই নয়, কমলপুর-বারাসত, গাদিয়াড়া-ধর্মতলা রুটে বেসরকারি ও সরকারি বাস এই রাস্তার উপর দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে। অটো-রিকশা, ট্রেকার এবং ছোটগাড়িও চলাচল করে এই রাস্তায়। মেরামতির কাজ না-হওয়ার জন্য যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে।
গরুহাটার পর থেকেই রাস্তাটি খানা-খন্দে ভরে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি চলছে প্রায় দু’বছর ধরে। চলতি বছরে বর্ষার ঠিক আগে রাস্তার উপরে কিছু ইট পেতে গর্তগুলি ভরাট করা হয়েছিল। কিন্তু ইট উঠে যাওয়ায় ফের গর্তগুলি বেরিয়ে পড়েছে। রাস্তায় ঘুরে দেখা গেল গর্ত নেই এমন এক কিলোমিটার অংশও পাওয়া যাবে না। খারাপ রাস্তার জন্য ঘন ঘন দুর্ঘটনা হয়। অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন দুর্ঘটনায়। রাস্তা মেরামতির দাবিতে বাসিন্দারা বিভিন্ন এলাকায় অবরোধও করেছেন। যাত্রিবাহী বাসগুলি বেশ ঝুঁকি নিয়েই যে চলাচল করে তা জানালেন ধর্মতলা-গাদিয়াড়া রুটের কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (সিএসটিসি)-র বাসের এক চালক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাস চালকের বক্তব্য, “গরুহাটা পার হয়ে শ্যামপুরের দিকে যাওয়ার সময়েই নরক যন্ত্রণার শুরু। অনেক সময়ে গর্তে চাকা পড়ে গিয়ে বাস বিকল হয়ে গিয়েছে। যন্ত্রাংশের ক্ষতি তো রয়েইছে।” এক নিত্যযাত্রী বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বললেন, “আমরা বাসের ভিতরে বসে ইস্টনাম জপ করতে থাকি। বড় বড় গর্তের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে বাস দুলতে থাকে নৌকার মতো। যে কোনও মূহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।” এই রাস্তার দায়িত্বে থাকা পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক কর্তা জানান, রাস্তার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। একই সঙ্গে অবশ্য বিট্যুমিনের জোগান কম থাকায় এবং টাকার অভাবের ফলে টেন্ডার ডাকা হলেও কত দিনে কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে সন্দেহও আছে তাঁর। |