|
|
|
|
পর্যটনে মৃগোদ্যানের প্রস্তাব কুলিকে |
গৌর আচার্য • রায়গঞ্জ |
পর্যটক টানতে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষিনিবাস চত্বরে ডিয়ার পার্ক তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। সম্প্রতি রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন পক্ষিনিবাস পরিদর্শন করে ওই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরে ৮ মাস পক্ষিনিবাসে পরিযায়ী পাখি থাকে। ওই সময় পর্যটকরা প্রতিদিন পরিযায়ী পাখি দেখতে পক্ষিনিবাসে ভিড় করেন। কিন্তু পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাস ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে সেখানে বেড়াতে যাওয়ার উৎসাহ কমে যায়। ফলে বছরের ৪ মাস পক্ষিনিবাসে প্রবেশ টিকিটের চাহিদা খুব একটা থাকে না। বনমন্ত্রী বলেন, “পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পক্ষিনিবাস চত্বরে ডিয়ার পার্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিয়ার পার্কে ঘেরা দেওয়া জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ রাখা হবে। পক্ষিনিবাস চত্বরে ওই পার্ক তৈরি হলে হরিণ দেখতে বছরভর পর্যটকরা ভিড় জমাবেন। ফলে বনদফতরের আয় বাড়ানো সম্ভব হবে। বনদফতরের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ডিয়ার পার্ক তৈরির অনুমতি চাওয়া হবে। অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর জুলাই মাস নাগাদ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ওপেন বিল স্টক, করমোন্যান্ট, নাইট হেরন সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কুলিক পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পর ফ্রেব্রুয়ারি মাস নাগাদ ওরা ফিরে যায়। পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাসের বড় বড় গাছের ডগায় বাসা বেঁধে আশ্রয় নেওয়ার পর প্রজনন চালায়। ওই পাখিদের দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু পর্যটক পক্ষিনিবাসে ভিড় করেন। পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাসে থাকাকালীন জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড় থাকায় বনদফতরের তরফে ‘অন সিজন’ ধরা হয়। কিন্তু পাখিরা পক্ষিনিবাস ছেড়ে চলে গেলে পর্যটকরা সেখানে বেড়াতে যাওয়ার উৎসাহ হারানোয় মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময়কে বসা হয় ‘অফ সিজন’। অফ সিজনে পক্ষিনিবাসে কোনও আকর্ষণ না থাকায় পর্যটকরা ভিড় করেন না বলে বন দফতরের ধারনা। সেই কারণে ওই সময় টিকিট বিক্রির পরিমান অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ায় বনদফতরের আয়ও কমে। ওই পরিস্থিতি সামাল দিতে বন দফতরের তরফে ডিয়ার পার্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বন কর্তারা মনে করেন ডিয়ার পার্ক তৈরি হলে সারা বছর পক্ষি নিবাসে ভিড় থাকবে। বন দফতরের আয় বাড়বে। এদিকে বনমন্ত্রী কুলিক পক্ষিনিবাস চত্বরে ডিয়ার পার্ক তৈরির উদ্যোগের কথ ঘোষণা করায় খুশি উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। জেলা কংগ্রেস সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “ডিয়ার পার্ক তৈরি হলে পক্ষিনিবাস চত্বরে সারা বছর পর্যটকের ভিড় থাকবে। রায়গঞ্জের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। বনমন্ত্রী ডিয়ার পার্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়ায় তাঁকে দলের তরফে ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা পাঠানো হবে।” জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “পূর্বতন রাজ্য সরকার কয়েক বছর আগে পক্ষিনিবাস চত্বরে ডিয়ার পার্ক তৈরির উদ্যোগ নিলেও প্রশাসনিক নানা জটিলতায় তা হয়নি। নতুন সরকারের বনমন্ত্রী ওই বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ায় আমরা খুশি। ডিয়ার পার্ক তৈরি হলে পরিযায়ী পাখিরা চলে যাওয়ার পরেও পর্যটকরা পক্ষিনিবাসে বেড়াতে যাবেন।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, “আকর্ষণ বাড়িয়ে পক্ষিনিবাসে সারাবছর পর্যটক টানার লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘদিন ধরে নতুন সরকারের বনমন্ত্রীর কাছে ডিয়ার পার্ক তৈরি করার আর্জি জানিয়ে আসছিলাম। বনমন্ত্রী বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। ডিয়ার পার্ক তৈরি হলে বন দফতরের আয় বাড়বে।” |
|
|
|
|
|