|
|
|
|
আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বন্ধ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য |
আশিস বসু • আগরতলা |
ট্রাকে মাল তোলা-নামানোর পর্যাপ্ত জায়গা নিয়ে সমস্যায় ত্রিপুরার আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। রাজ্য সরকারের তরফে বিকল্প ‘ডাম্পিং স্টেশন’ না করে দেওয়া পর্যন্ত এই আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বলে ত্রিপুরা এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের একাংশ জানিয়েছেন।
রবিবার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠকে সদস্যদেরই একটি অংশ অনির্দিষ্টকাল ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হাবুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কিছু সদস্য সভাপতির উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে জোর করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে ভারত ও বাংলাদেশ আমদানি-রফতানি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” আখাউড়া সীমান্তের ও-পারে দু’শো ট্রাক মালবোঝাই করে দাঁড়িয়ে আছে। সংখ্যাটি প্রতি দিনই বাড়বে। উভয় দিকের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে যুক্ত ব্যবসায়ীদের আগাম না জানিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি বলে সম্পাদক মনে করেন।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে ত্রিপুরা ক্ষুদ্র শিল্প কর্পোরেশন (টিএসআইসি) রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে আমদানি-রফতানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় কিছু ফাঁকা জায়গা চুক্তির ভিত্তিতে লিজ দিয়েছিল। ৮১ জন ব্যবসায়ীকে ২ বছরের জন্য এই জমি লিজ দেওয়া হয় সেলামি সহ মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে। ওই জায়গায় ব্যবসায়ীরা তাঁদের আমদানি-রফতানির জিনিস নামিয়ে রাখতেন, সেখান থেকে আবার ট্রাক বোঝাই করে গন্তব্য স্থানে নিয়ে যেতেন। কিন্তু এই জমি আসলে কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের। গত মাসে এক সরকারি নোটিশ জারি করে টিএসআইসি-র সঙ্গে ব্যবসায়ীদের চুক্তিটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। আখাউড়া সীমান্তে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট চেকপোস্ট’ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার জন্য শুল্ক দফতরের ওই জায়গাটি প্রয়োজন। রাজ্যের অধিকাংশ আমদানি-রফতানি ব্যবসায়ী আন্তার্জাতিক বাণিজ্যের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পটি মেনেও নিয়েছেন বলে জানালেন ত্রিপুরা এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক।
তবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও ব্যবসায়ীদের একাংশ ‘প্লট’গুলি ব্যবহার করছিলেন। কিন্তু শুল্ক দফতর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের খাতিরে সম্প্রতি এই ‘প্লট’গুলি ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছে। জটিলতা তা নিয়েই। রাজ্য সরকারের প্রস্তাব, ব্যবসায়ীরা গাড়ি থেকে গাড়িতে সরাসরি জিনিসপত্র ওঠানো-নামানো (লোডিং-আনলোডিং) করুক। আপত্তি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, বিকল্প ‘ডাম্পিং স্টেশন’ যত দিন পর্যন্ত না হবে, আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে।
টিএসআইসি কর্তা সুভাষ দাসের মন্তব্য, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প ‘ডাম্পিং স্টেশন’ করতে পেরেছে কি না তা তাঁরা জানেন না। এ দিকে ত্রিপুরা এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক হাবুল বিশ্বাস জানান, খুব শীঘ্রই সদস্যদের সঙ্গে বসে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে। যদি তাতেও জটিলতা না কাটে, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের শীর্ষস্তরের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠবে। |
|
|
|
|
|