তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িয়ে গেল সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান আইনূল হকের নাম। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বর্ধমানের কাছারি রোডে ভাঙচুর, মারপিট ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। জখম হন পাঁচ তৃণমূল সমর্থক। এই ঘটনায় বর্ধমান থানায় দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারই একটিতে নাম রয়েছে পুরপ্রধানের।
বোমাবাজি ও ক্লাব ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়াল বর্ধমানের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাছারি রোডে। জখম হন দুই মহিলা-সহ পাঁচ জন। পুলিশ আগেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল। এই ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিজয়চাঁদ ঘোষালের ছেলে অর্ণব ঘোষাল। তাতে অভিযোগ রয়েছে সিপিএম নেতা অতনু হুই, দেবদুলাল ঠাকুর, সুবীর সেন, দুলাল নাগ-সহ মোট ২৬ জনের বিরুদ্ধে।
এ দিকে, অন্য একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এই সংঘর্ষের ঘটনায় জখম রাজ রাউত। তাঁর অভিযোগে রয়েছে ১৩ জন সিপিএম নেতার নাম। তাঁরা হলেন, পুরসভার চেয়ারম্যান আইনূল হক, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অধিক্রম সান্যাল, প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা সিপিএমের বর্ধমান-১ লোকাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক দুলাল নাগ, ডিওয়াইএফ নেতা সুবীর সেন, সদ্য বর্ধমান শহর জোনাল কমিটির সদস্য নির্বাচিত হওয়া অতনু হুই প্রমুখ।
সোমবার এই ঘটনায় ধৃত তিন সিপিএম সমর্থক সখারাম মাঝি, রঞ্জিত মাইলি ও রামু মাইলিকে সিজেএম আদালতে তোলা হলে ভারপ্রাপ্ত বিচারক ভাস্কর মজুমদার তাঁদের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দশে দেন। প্রথম মামলাটিতে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মারধর, মহিলাদের শ্লীলতাহানি, জোর করে ঢুকে সম্পত্তি নষ্ট করা ইত্যাদি ধারায় অভিযোগ হয়েছে। অন্যটিতে এই সব ধারাগুলি ছাড়াও চুরি, হুমকি ও বোমাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, “আইনূল হকের নামে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে তদন্ত করে দেখতে হবে তিনি বা অন্য নেতারা এই ঘটনায় সত্যিই জড়িত কী না। তার আগে তো কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। তদন্তে দোষী বলে দেখা গেলে কাউকেই ছাড়া হবে না।”
আইনূল হক বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু সেখানে পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের লোকজন ছিলেন। আমি যদি তখন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তাম তাহলে পুলিশ আমাকে সেখানেই গ্রেফতার করত।” তাঁর দাবি, “পুলিশ ও তৃণমূলের একাংশ এ ভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাকে ও আমাদের দলের নেতাদের বিপদে ফেলতে চাইছে। বর্ধমানের মানুষই এর বিচার করবেন।” |