পুলিশ খুঁজছে। কিন্তু সংগ্রামপুরের বিষমদ-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ‘খোঁড়া বাদশা’ এলাকাছাড়া হওয়ার পিছনে ‘ভূমিকা’ রয়েছে মগরাহাট এলাকার দুষ্কৃতী সেলিম লস্কর ও তার দলবলেরও। ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি সিআইডি-র।
বুধবার বিষমদ-কাণ্ডের পরেই দুই স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বেপাত্তা ‘বাদশা’। মগরাহাট, রায়দিঘি, হলদিয়া ও দক্ষিণ শহরতলির মেটিয়াবুরুজে কয়েকটি গোপন আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে ওই চোলাই কারবারির সন্ধান না মিললেও ‘বাদশা’ এবং সেলিমের ‘আকচাআকচি’ নিয়ে বিস্তর তথ্য সিআইডি পেয়েছে। সেলিমের দল ‘বাদশা’কে খুঁজছে বলেও খবর রয়েছে সিআইডি-র কাছে। |
সোমবার আরও দু’জনের মৃত্যুর পরে বিষমদ-কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭২-এ। ওই ঘটনায় সেলিমের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও অভিযোগ নেই। তবে ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে ১৩ জন। রবিবার তাদের মধ্যে ৭ জনকে নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে সিআইডি। সিআইডি সূত্রের খবর, তাদের জেরা করে বাদশা-সেলিমের বিবাদ সংক্রান্ত নানা সূত্র মিলেছে।
সিআইডি-র দাবি, সেলিম মগরাহাট এলাকায় নিজের ‘নিয়ন্ত্রণ’ বজায় রাখতে চাইছিল। সেখানে তাকে অগ্রাহ্য করে একের পরে এক চোলাইয়ের ভাটি এবং ঠেক খুলছিল ‘বাদশা’। তা নিয়েই দু’পক্ষে বিরোধ বাধে। মাস দেড়েক আগে মগরাহাট স্টেশন চত্বরে ‘বাদশা’র মদের ভাটি ভেঙে দেয় পুলিশ। ফের ওই ভাটি তৈরির তোড়জোড় শুরু করতেই ‘বাদশা’কে বাধা দেয় সেলিম।
বিষমদ-কাণ্ডের দিনকয়েক আগেই সংগ্রামপুর স্টেশনে ‘খোঁড়া বাদশা’কে মারধর করে সেলিমের দলের ছেলেরা। বিষ মদ খেয়ে ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের মৃত্যুর পরে ফের ‘বাদশা’র খোঁজ শুরু করে সেলিম। তার পরেই ‘বাদশা’ এলাকা ছাড়লেও নিজস্ব ‘নেটওয়ার্ক’-এ তার খোঁজ এখনও করছে সেলিম। সে কথা জেনে সতর্ক হয়ে গিয়েছে ‘বাদশা’ও। এই তথ্য মাথায় রেখেই ‘বাদশা’র খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
বিষমদ-কাণ্ডের প্রাথমিক ফরেন্সিক রিপোর্ট ইতিমধ্যে হাতে এসেছে জেলা পুলিশ ও সিআইডি-র। পুলিশ সূত্রের খবর, সংগ্রামপুরের ঠেকগুলি থেকে বিষ-চোলাইয়ের যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাতে প্রায় ৬০ শতাংশ মিথাইল অ্যালকোহল ছিল। সে জন্যই এত তীব্র বিষক্রিয়া হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিষমদ-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখন চোলাই ভাটি ও ঠেক উচ্ছেদের অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
রবিবার রাত ও সোমবার সকালে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ হাজার লিটার চোলাই উদ্ধার করা হয়েছে। ধরা হয়েছে ৪২ জনকে। এলাকার চোলাই-ভাটি এবং ঠেক ভাঙার দাবিতে এ দিন মন্দিরবাজারে কুলপি-লক্ষ্মীকান্তপুর রোডে ঘণ্টা পাঁচেক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। |